গাইবান্ধায় অনিয়ম: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে ইসির চিঠি

ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে না জানালে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2023, 04:41 PM
Updated : 30 March 2023, 04:41 PM

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়মের সাথে জড়িতদের কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-দপ্তরগুলোকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পাওয়ার পর বুধবার এ চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির উপ সচিব আতিয়ার রহমান।

গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় পুরো আসনের এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।

পরে তদন্তের পর নির্বাচনে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সম্পৃক্ততার কারণে রিটার্নিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশের উপ-পরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

ইসির সুপারিশ অনুযায়ী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো কি না, এক মাসের মধ্যে তা কমিশনকে জানাতে বলা হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে।

চার মাসেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না থাকায় মঙ্গলবার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, “আমরা যে চিঠিগুলো দিয়েছিলাম, সেই চিঠিগুলো ১৩৩টার মতো হবে, ৪০টির মতো জবাব পেয়েছি যে- তারা (মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর) অ্যাকশন নিচ্ছে। পদ্ধতিগতভাবে দীর্ঘসূত্রতা হলেও ব্যবস্থা নেওয়ার অগ্রগতি জানতে আবার চিঠি দেওয়া হবে।”

নতুন করে পাঠানো তাগাদাপত্রে কমিশন বলেছে, নির্বাচনে কর্তব্যরতদের অসদাচরণের কারণে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২০ ডিসেম্বর এক দফা চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

“কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হতে অদ্যাবধি উল্লিখিত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বা গৃহীত কার্যধারা সংক্রান্ত পত্র পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায়, পত্র প্রাপ্তির ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ইসিকে জানাতে পুনঃঅনুরোধ করা হলো।”

ইসির হুঁশিয়ারি

ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয় চিঠিতে।

চিঠিতে বলা হয়, “অন্যথায় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর ধারা-৬ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক হবে।”

ধারা ৬ এর উপধারা (২)-বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ধারা ৫(৩) এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ পালন বা কার্যকর না করলে বা ধারা ৫(৪) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ডে, বা অনধিক দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন৷

ধারা ৫ এর উপধারা (৩)-এ বলা হয়েছে: কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তা অসদাচরণ করলে চাকরিবিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।

৫ ধারার (৪) উপ-ধারা (১) বলা হয়েছে, অসদাচরণের জন্য কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে কোনো নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে কমিশন অনুরোধ করলে এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে তা কমিশনকে অবহিত করবে।

Also Read: গাইবান্ধায় অনিয়মকারীদের শাস্তির অগ্রগতি কী, জানতে চিঠি দেবে ইসি

Also Read: গাইবান্ধার রিটার্নিং অফিসারসহ শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি

Also Read: গাইবান্ধায় পুনর্ভোটেও অনিয়মকে ‘প্রশ্রয় দেবে না’ ইসি