বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় ভারত যাননি, তাকে ধরে নিয়ে সীমান্তে পার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ছিল।
Published : 11 Aug 2024, 09:36 AM
নয় বছর আগে ঢাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজেকে আবিষ্কার করেছিলেন ভারতের শিলংয়ে; রোববার দুপুরে দেশে ফিরছেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।
দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিমানবন্দর থেকে সকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে হাজারো শুকরিয়া, অশেষ রহমত, অনেক বছর পর আমি আমার স্বাধীন মাতৃভূমিতে আসার সুযোগ পাচ্ছি। দেশবাসীসহ প্রবাসে থাকা সকল বাংলাদেশীর প্রতি আমার সালাম ও শুভেচ্ছা।”
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে বেলা ২টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে জানান সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহ উদ্দিন। তখন তিনি যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ওই বছরের ১১ মে মেঘালয়ের শিলংয়ের পুলিশ উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভারতে প্রবেশ করলেও তার কোনো বৈধ কাগজপত্র সেসময় মেঘালয় পুলিশ না পাওয়ায় ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
সেই মামলায় ২০১৫ সালের ২২ জুলাই শিলংয়ের আদালতে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়।
মেঘালয় পুলিশের করা ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর খালাস পান সালাহ উদ্দিন। পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভারত সরকার আপিল করে।
ওই আপিল নিষ্পত্তি করে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলং জজ কোর্ট তাকে খালাস দেয়। দ্রুত যেন তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশনা দেয় আদালত।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে ফিরলে বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কায় এতদিন তার ফেরা হয়নি।
সালাহ উদ্দিন বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তা হয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন তিনি।
পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, পরে চারদলীয় জোট সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও সংসদ সদস্য ছিলেন।
ভারতে আটকের সময়ে সালাহ উদ্দিন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তার অনুপস্থিতিতেই তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়।
বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় ভারত যাননি, তাকে ধরে নিয়ে সীমান্তে পার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ছিল।