আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ঘোষিত রায়ের ‘তীব্র নিন্দা’ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা জানিয়েছেন।
Published : 28 Jan 2024, 11:21 AM
বাংলাদেশের ‘অবনতিশীল’ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পাস করা এক প্রস্তাবে অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের সাজা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে অধিকার প্রসঙ্গ’ শীর্ষক প্রস্তাব পাস হওয়ার কথা জানানো হয়।
১০ বছর আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে এদিনই আদিলুর ও এলানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ‘ক্রমাবনতিশীল’ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এনজিও, মানবাধিকার রক্ষক, কর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা।
সেখানে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশকে অবশ্যই তারা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখতে হবে। বিশেষ করে ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস। পার্লামেন্ট সদস্যরা বলেছেন, নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো যাতে বেশি অনুদান পেতে পারে, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”
আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ঘোষিত রায়ের ‘তীব্র নিন্দা’ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা জানিয়েছেন উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এবং অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে এই আদেশ বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছেন।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘অস্ত্র ছাড়া সবকিছু বা ইবিএ’ নীতির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা ত্বরান্বিত করার উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মধ্য ডানপন্থী, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট, বামপন্থীসহ সাতটি গ্রুপ বাংলাদেশ বিষয়ক এই প্রস্তাব আনে। এরপর প্রস্তাবের উপর বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার তা পাস হয়।
প্রস্তাব পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই উদ্যোগ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “উনারা যেটা আলোচনা করছেন, এটার লেজিসলেটিভ কোনো অথরিটি নাই। এটা বাধ্যতামূলকও নয়। উনারা ৭৫৩ জন সদস্য আছেন, তারা অনেকে অনেক বক্তব্য দিতে পারেন, এটা তাদের ব্যাপার। তবে, এটা দুঃখজনক, উনারা বক্তব্য অনেক ক্ষেত্রে দেন, কারও কারও লোকের প্ররোচনায়। কেউ ইনিশিয়েটিভ নেয়, উনাদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য, তাদেরকে বক্তব্য দিতে দিন।”
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা যেটা মনে করি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আমাদের একটা পরিপক্ক সম্পর্ক রয়েছে এবং সেই সম্পর্কের জায়গা থেকে আমাদের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয় এবং সেটাও আবার আদালতে বিচারাধীন, এ ধরনের কার্যক্রমে আশা করি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট হস্তক্ষেপ করবে না, ইউরোপীয় কাউন্সিল এটা আমলে নেবেন না।”
তিনি বলেন, “এটা হস্তক্ষেপ। আশা করি, কমনসেন্স উইল প্রিভেইল এবং উনাদের একাধিক বক্তা যে বলেছেন, সেটা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা উপলব্ধি করতে পারবেন।”
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)