“কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে সরকার এর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”
Published : 03 Aug 2024, 09:13 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশু মৃত্যুর যে তথ্য ইউনিসেফ দিয়েছে, সে ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখসহ তালিকা সরবরাহ করা হলে সরকার ‘যথাযথ ব্যবস্থা নেবে’ বলে জানিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ।
শনিবার মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩২ জন শিশু নিহত হওয়ার এ মুহূর্তে কোনো তথ্য নেই। তাছাড়া ইউনিসেফের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের এ বিবৃতিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের উল্লেখ নেই এবং নিহতদের নাম, পরিচয়, প্রোফাইল বা তালিকা উল্লেখ নেই।”
ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরার শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। অনেক শিশু আহত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে।
শিশুসহ বাংলাদেশের মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি মৃত্যুও কোনভাবেই সরকারের কাম্য নয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে সরকার এর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”
ইউনিসেফের বিবৃতিতে শিশু বেআইনিভাবে আটকের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে সরকার বলছে, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জ্ঞাতসারে কোনো শিশুকে বেআইনিভাবে আটক করেনি। তারপরও কোথাও এ সংক্রান্ত ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা জানামাত্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় ১৭ বছর তিন মাস আট দিন বয়সী এক কিশোরকে আইনের আওতায় নেয়ার যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, এই কিশোর সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি।
সবশেষ তার রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে শিশু আইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে তাকে গাজীপুরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাংলাদেশ সরকার সবসময় শিশুদের ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
“শিশুদের নিয়ে যে কোনো আন্তর্জাতিক আইন, সনদ বা ঘোষণা মেনে চলতেও বাংলাদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কয়েকজন শিশু নিহত হওয়ায় ঘটনায় সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।
“শিশু হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”
শিশু মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে যে কোনো অপপ্রচার বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আহ্বান জানিয়েছে সরকার।