“খারাপ খবর থাকলে অবশ্যই ছাপবেন, এতে দোষের কিছু নাই। অনর্থক যেন, মূলধারার গণমাধ্যম ইউটিউবের মত না হয়ে যায়।”
Published : 11 Aug 2024, 11:18 PM
ক্ষমতার পালাবদলের পর সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর-মন্দিরে হামলার ঘটনা সমর্থন করেন না পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজের প্রথম ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “সহিংসতা ঘটেছে, এটা দুটো কারণ থাকতে পারে। যেমন- একজন বলছে যে ঠিক আছে, অমুক জায়গায় বলা হচ্ছে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। তার সাথে মুসলমানের ঘরেও তো আক্রমণ হয়েছে। কারণ, সেটা আসলে ধর্মীয় কারণে না, রাজনৈতিক কারণে।”
এরপর তিনি বলেন, “এর মানে, এই নয় যে রাজনৈতিক কারণে কোনো সংঘাত বা সহিংসতা চালানো, আগুন লাগিয়ে দেওয়া বা আঘাত করা, এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায়; রাজনৈতিক কারণে অথবা ধর্মীয় কারণে, কোনো অবস্থাতেই না।”
পৃথিবীর সব জায়গাতে সংখ্যালঘুদের একটু বেশি সুরক্ষা দিতে হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেটা মিডিয়াতেও আমি দেখেছি যে, অনেক জায়গাতে আমরা দেখেছি, যাদের আমরা ধর্মভিত্তিক বলি, তারাও কিন্তু তাদের কর্মীবাহিনীকে পাঠিয়েছে, তাদেরকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য। পারফেক্ট কোনো কিছু হবে এটা আশা করা উচিত না।”
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থক ও হিন্দুদের বাড়িঘর, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে বেপরোয়া হামলা শুরু হয়।
উপাসনালয়ে পাহারার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। তবে এর মধ্যেও এসব ঘটনা ঘটেই চলেছে আর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশও হচ্ছে এসব ঘটনায়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এসব ঘটনা বেশ মনোযোগ পাওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যদি আমি আপনাদেরকে বলি, না, এই রকম কিছু হয় নাই, এটা বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে না, বা আপনারাও আমাকে বিশ্বাস করবেন না। বিষয়টা হল, ঘটনা ঘটেছে, আমরা জানি কিছু সহিংসতা ঘটেছে।”
এসব ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবারই বৈঠক করতে পারেন জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে সব তথ্য চেয়েছি যে, কোথায় কী বলপ্রয়োগ হয়েছে; কিছু পেয়েছি এবং তাদের কাছ থেকে আমরা আরও নেব।
“আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, প্রত্যেকটা সংঘাত, অনাচার বা অত্যাচার যেটা হয়েছে, যারা করেছে, কোনো দলমত না দেখে, তাদেরকে আমরা বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করব। এটা কোনো অবস্থাতে গ্রহণযোগ্য না যে, ধর্মের কারণে বা রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে অত্যাচার বা নির্যাতনের সম্মুখীন হবেন।”
গণমাধ্যমে সংবাদ ছাপার সময় আগে ‘দেখার’ অনুরোধও করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব কাজে স্বচ্ছতা ও সততা বজায় রাখবে বলে আশ্বাস দিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, “বয়ানগুলোকে সত্য ও স্বচ্ছ রাখার চেষ্টা করব। আপনাদেরকে অনুরোধ করব, একটু দেখে খবর ছাপবেন।
“খারাপ খবর থাকলে অবশ্যই ছাপবেন, এতে দোষের কিছু নাই। অনর্থক যেন, মূলধারার গণমাধ্যম ইউটিউবের মত না হয়ে যায়।”