এর আগেও পুলিশের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনকালে আলোচনায় আসেন তিনি।
Published : 01 Aug 2024, 12:10 AM
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বে এসে নতুন করে আলোচনায় আসা অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ মনে করেন, কাজ করলে আলোচনা হবে।
বুধবার এ পুলিশ কর্মকর্তাকে গোয়েন্দা বিভাগ থেকে সরিয়ে ডিএমপির ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্সে বদলি করা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে ডিবি কার্যালয়ে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে তাদের সঙ্গে খাওয়ার ছবি ফেইসবুকে প্রকাশ হলে তা নতুন আলোচনা তৈরি করে। এ নিয়ে হাই কোর্ট উষ্মা প্রকাশের পর বুধবার তার বদলির আদেশ আসে।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করলে ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিএমপির ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করা হারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবশ্যই কাজ করলে আলোচনা হবেই, কাজ না করলে কী হবে? কাজ করেছি, সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, মানুষের আস্থার জায়গায় গেছি। যেখানেই যাব, সেখানেই আস্থার জায়গা তৈরি করার চেষ্টা করব।”
ডিবির দায়িত্বে পাওয়া নতুন কর্মকর্তা অতিরিক্ত কমিশনার আশরাফুজ্জামানকে বৃহস্পতিবার সব বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন হারুন। আশরাফুজ্জামান এর আগে ডিএমপির লজিস্টিকস ফিন্যান্স ও প্রকিউরমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালনকালে হারুন তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে আসা বিভিন্নজনকে ভাত খাওয়ান। সেসব ছবি নিজের ফেইসবুকে শেয়ার করেন, যা নিয়ে বেশ আলোচনায় ছিলেন এ কর্মকর্তা।
সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে নিরাপত্তা দিতে তার কার্যালয়ে গত কয়েকদিন থেকে রেখেছেন তিনি। তাদের অ্যাপায়ন করার একটি ছবি আবার আলোচনা তৈরি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলে সোমবার হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ উষ্মা প্রকাশ করে বলে, “ডিবি অফিসে যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না।”
ডিবির দায়িত্ব থেকে বদলির আদেশের পর ছয় সমন্বয়কারীর সবশেষ অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, “এখন বদলির অর্ডার হয়ে গেছে। এখন আর এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না। এ ব্যাপারে এখন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কথা বলবেন।”
এর আগেও পুলিশের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনকালে আলোচনায় আসেন হারুন অর রশীদ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার থাকাকালে ২০১১ সালে পুলিশের দিকে তেড়ে যাওয়া তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে ধাওয়া দিয়ে বেদম পিটুনির ঘটনায় আলোচিত হন।
পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের পর গাজীপুরের পুলিশ সুপার হন তিনি। সেখানে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের মধ্যে ২০১৮ সালের মে মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় বিএনপি তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলে। এরপর ওই বছরের অগাস্টের শুরুতে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশে বদলি করা হয়।
একই বছরের ২ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক দিন আগে হারুনকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করে সরকার।
নারায়ণগঞ্জে ১১ মাসের দায়িত্বে সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ ঘোষণা করেন হারুন। হকার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তিনি যেমন প্রশংসিত হন, তেমনি নারায়ণগঞ্জের অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে ‘টক্করে’ গিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দেন।
২০১৯ সালে পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার এম এ হাশেমের ছেলে আমবার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজের স্ত্রী ও সন্তানকে আটক করেও আলোচনার জন্ম দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আনা হয়েছিল। পরে আবার তাকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরে ডিআইজি হিসেবে ২০২২ সালের ১১ মে পদন্নোতি পাওয়ার পর একই বছর ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ডিবির দায়িত্ব পান। এর আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন-
'মশকরা': ডিবি থেকে সরানো হল হারুনকে