কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকেট না কিনে বরং ধরিয়ে দিন: রেলমন্ত্রী

রেলের সম্পদ জনগণের; যাত্রীদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে, বলেছেন মন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2022, 03:50 PM
Updated : 15 Nov 2022, 03:50 PM

রেলের ই-টিকেটিংয়ে যারা ‘কালোবাজারি’ করছে তাদের কাছ থেকে টিকেট কিনে প্রতারিত না হয়ে ধরিয়ে দিতে যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

মঙ্গলবার বিকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রেল সেবা সপ্তাহ- ২০২২ এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া রেলের কালোবাজারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ই-টিকেটিং নিয়ে যারা কালোবাজারি করছে তাদের কাছ থেকে টিকেট না নিয়ে তাদের ধরিয়ে দিন।"

‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ প্রতিপাদ্যে ‘সেবা সপ্তাহ’ উদ্বোধনের পর রেলের চলমান কয়েকটি প্রকল্প নিয়েও আলাপ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা যাত্রীদের রেল সেবা বাড়াতে কাজ করছি। রেলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যাত্রীসেবা বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

“আমাদের টিকেটিং ব্যবস্থায় কালোবাজারি ছিল। সেগুলো আমরা পরিপূর্ণভাবে এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তবে উদ্যোগ নিয়েছি। ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’- আমরা সে ব্যবস্থা চালু করছি।"

সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে মন্ত্রী সুবর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও চকলেট বিতরণ করেন ।

দিনটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৮৬২ সালের এই দিনে ব্রিটিশ সরকার সর্বপ্রথম এ অঞ্চলে ট্রেন চালু করেছিল। ১৫ নভেম্বর রেলওয়ের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন।

চলমান প্রকল্পগুলো নিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ঢাকা-টঙ্গীর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ রেললাইন, টঙ্গী-জয়দেবপুরের মধ্যে দ্বিতীয় রেললাইন নির্মিত হচ্ছে। যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু ডাবল লাইনে নির্মিত হচ্ছে‌।

“এটি নির্মিত হলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে পূর্বাঞ্চলের রেল যোগাযোগ উন্নত হবে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় আগামী জুনে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চালু হয়ে যাবে।”

রেলমন্ত্রী জানান, আগামী বছরের জুনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চালু হবে; পাশাপাশি খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত রেললাইন চালু হবে।

সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণসহ সারাদেশের মিটারগেজ লাইনকে পর্যায়ক্রমে ব্রডগেজে রূপান্তরের উদ্যোগের কথাও জানান মন্ত্রী।

দেশের প্রতিটি জেলাকে রেলের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ভবিষ্যতে ইলেকট্রিফিকেশনের মাধ্যমে ট্রেন চালিত করবো।"

যাত্রীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “রেলের সম্পদ জনগণের। যাত্রীদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্য থেকে যাত্রীদের সেবা বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

২১ নভেম্বর পর্যন্ত চলা রেল সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার সভাপতিত্ব করেন।

এতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সফিকুর রহমান, রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক জয়দেব কুমার ভদ্র, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।