নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে, রাতেই কাজে ফিরছেন শ্রমিকরা, বলেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
Published : 28 Dec 2024, 10:29 PM
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার রাতে ঢাকায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক থেকে রাত ৯টার পর ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) কমডোর মাকসুদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলোচনার পর নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘট স্থগিত করে রাত থেকেই কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।”
জাহাজে সাত শ্রমিক খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার, তাদের প্রতেক্যের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে ধর্মঘট শুরু করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, শ্রমিকদের দাবি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আলোচনার পর তারা ধর্মঘট স্থগিতে রাজি হয়েছেন।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলোচনা শেষে ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং রাত থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।”
বৈঠকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রতিনিধি ও শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ আলমসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
জাহাজে ৭ খুন: নৌযান ধর্মঘটে পণ্য খালাস বন্ধ, পথে আটকা ১০ লাখ টন
সোমবার বিকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে এমভি ‘আল বাখেরা’ জাহাজ থেকে পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ সময় গুরুতর আহত আরও তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধর্মঘটে সারা দেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। তবে যাত্রী পরিবহন ধর্মঘটের আওতায় ছিল না।
নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা ও বরিশাল বন্দরে পণ্য উঠানো নামানো বন্ধ হয়ে যায়। শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের বহিনোঙরে থাকা ২০টি বড় জাহাজ বা মাদার ভেসেলে থেকে পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। এসব জাহাজ প্রায় সাড়ে চার লাখ টন মসুর ডাল, গম, সয়াবিন বীজ, সার, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন খোলা পণ্য নিয়ে এসেছে।
এছাড়া পণ্যবোঝাই করে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দেওয়া ৭৭০টির মত ছোট জাহাজ বা লাইটার জাহাজ পথে আটকা পড়ে। এসব জাহাজ প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য পরিবহন করছে।
শুক্রবার বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, বর্হিনোঙরে পণ্য খালাস ও পরিবহন বন্ধ থাকা মানে বড় জাহাজগুলোর অপেক্ষমান সময় বাড়া, তাতে করে খরচও বাড়ে। এর সামগ্রিক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ে।