জাহিদ সোহাগ-এর পিএইচডির ছাত্রী ও ব্রুটাসের স্বপ্ন

জাহিদ সোহাগজাহিদ সোহাগ
Published : 20 July 2016, 07:34 AM
Updated : 31 May 2022, 07:25 AM


পিএইচডির ছাত্রী

সে তার শরীরটা দিলেই গবেষণার কাজ শুরু করতে পারে। এ ছাড়া গতান্তর নেই। ভর্তি সংক্রান্ত আলাপে চেয়ারম্যান নিজের বদলে চেয়ারে একটা পাথর বসিয়ে রাখে। ছয় ঘণ্টা জার্নি করে সে ডিপার্টমেন্টে পৌঁছুলেও ওয়েটিং রুমে বসে থেকে থেকে, এমনকি ওয়াশরুমেও না গিয়ে, যদি এরই মধ্যে তার ডাক আসে, সে সচেতন হয়ে বসে থাকে। সে প্রতিবার ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও প্রস্রাবের চাপ সামলায়। গতকাল মেসেঞ্জারে তার বার্তা সিন করলেও চেয়ারম্যান নিরুত্তর, তবু সে বাড়িতে বসে না থেকে মোট বারো ঘণ্টা জার্নির ভেতর নিজেকে ঠেসে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়।

তার উপস্থিতির খবর টেবিলে কাচের উপর পেপার ওয়েট দিয়ে চাপা দিয়ে রাখা আছে। সে দরোজা লাত্থি দিয়ে ঢুকে নিজের শরীর উন্মুক্ত করে চেয়ারম্যানকে ঠেসে ধরবে কিনা ভাবে। কিন্তু দুপুর গড়াতে থাকলে সে টের পায় তার পাজামার নিচ দিয়ে কিছু একটা জ্যান্ত হয়ে উঠেছে। সে লেজ টেনে ধরে। ভেতরে ঢুকে থাকে অর্ধেকটা।
হঠাৎই সে ঢুলনি থেকে জেগে ওঠে, দেখে চেয়ারম্যানের পিঠে মদ ছড়ানো বিকেলের মতো রোদ; সে দৌড়ে যায়, 'স্যার…' চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি শুধু বললেন জরুরি কাজ পড়েছে তার।
সে আবারো তার কাগজপত্র অফিসে জমা রেখে আসে ব্যবহৃত হতে না-চাওয়া যোনির স্তুপের উপর।

ব্রুটাসের স্বপ্ন
জুলিয়াস সিজারকে হত্যার ছুরিগুলো কি এখনো অক্ষত আছে–এমন একটি প্রশ্নে শেষঘুম থেকে বিছানায় বসেন শেকসপিয়ার বিশেষজ্ঞ, মঞ্চের ব্রুটাস; তিনি চোখ রগড়ানোর মধ্যেও দেখতে পান ধারালো ওই হন্তারকের হাতল থেকে কাঠ খুলে খুলে যাচ্ছে। পৃথিবী থেকে নাকি কিছুই হারায় না, সৌদি আরবে চুরির দায়ে আঙুল হারানো এহসানও না; চুরির দায়ে কিনা ঠিক বলা যাবে না, শীলা অনুমান করেছিল তার প্রেমিকটি লাভ জিহাদ করে সৌদি গিয়েছিল, ফিরেওছিল আকাশের দিকে ইট গেঁথে গেঁথে ক্লান্ত হয়ে; আর ফিরলে তো শীলার শরীর, ঠিক শরীর নয় যোনিটুকুরই দরকার হবে। তখন আঙুল হারানো এহসানকে দেখে আঁৎকে উঠেছিল শীলা, 'ক্যামন কী? এহসান?' এহসানের চোখে শীলা কি চোর দেখতে পেয়েছিল? শীলা জানে না। অধ্যাপক তখন শেষ বর্ষের ছাত্র, ছেলেমেয়েস্বামী ও একটি প্রবাসী প্রেমিকও আছে এমন নারী তথা শীলার প্রেমে পড়েছে। শহরের নানা ফাঁক-ফোকরে চলে তাদের ধস্তাধস্তি।
কোত্থেকে একটি বেড়াল এই ভাবনার ভেতরে ঢুকে পড়ে। উল্টে যায় পানির গ্লাস, বারান্দার চুল শুকাতে যাওয়া মেহের, তার প্রায়-বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি স্ত্রী, চেঁচিয়ে উঠে, 'কী?'
ব্রুটাস ঝিমায়, আর দেখে ফ্লোরে গড়ানো পানির উপর মেহেরের ছবি ভেসে আসতে কতক্ষণ লাগে।
মেহের কিছু একটা বলে, প্রতিদিন যা বলে, বা বলেও না, ব্রুটাস অভ্যাসমতো উত্তর দেয়, 'না। কোনো স্বপ্নটপ্ন না।' এরইমধ্যে মেহেরকে তিনি ছো মেরে বিছানায় টেনে নিয়েছেন, সকালের প্রস্রাব-পায়খানার চাপের মধ্যে তার প্রবল লিঙ্গোত্থান শিথিল করতে তার ফুটোয় ঢোকেন প্রতিদিনকার মতো, আর মেহেরের শীৎকার ও লালায় মাখামাখি ঠেকাতে ব্রুটাস বালিশের ওয়ার খুলে তার মুখে পুড়ে দেয়ে।