মির্জা গালিব: কবিকে পাবে না খুঁজে জীবনচরিতে

আবার বন্ধুকে লেখা চিঠিতে সেই গালিবই লিখছেন-- ‘জীবনের অনেকটাই নষ্ট হলো মূঢদের উদ্দেশে স্তুতিকাব্য রচনা করে।’

জাকির তালুকদারজাকির তালুকদার
Published : 7 June 2023, 02:58 PM
Updated : 7 June 2023, 02:58 PM

মির্জা গালিব পারিবারিক সম্পত্তির অংশীদার হিসাবে ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে মাসোহারা পেতেন ৬২ টাকা ৫০ পয়সা। এটাই ছিল তার একমাত্র উপার্জন। ১৮৫০ সালের হিসাবে স্বচ্ছলভাবে সংসার চালানোর জন্য এই পরিমাণ টাকা হয়তো যথেষ্টই ছিল। কিন্তু গালিবের সংসার চলত না। নিজেকে অভিজাত সমাজের প্রতিনিধি দাবি করতেন তিনি। সেই প্রমাণও দিতে হতো জীবনযাপনে, আচরণে, সামাজিকতায়। পরিবারে ঝি-চাকর থাকতে হবে সার্বক্ষণিক অন্তত চারজন, পাল্কি ছাড়া পায়ে হেঁটে কোথাও যাবেন না, পরনের পোশাক ও মাথার টুপি হতে হবে বিশেষ ধরনের, প্রতিদিন সকালে ও রাতে তিনি পান করবেন উৎকৃষ্ট ফরাসি মদ, জুয়া খেলবেন নিয়মিত (জুয়া খেলার অপরাধে ১৮৪৭ সালে তিনমাস জেল খাটতে হয়েছিল গালিবকে), কোঠেওয়ালির (বাঈজি) ঘরে যেতে হবে নিয়মিত বিরতিতে, পুষতে হবে রক্ষিতা, বাড়িতে মাঝে মাঝে অভিজাত বন্ধুদের জন্য পান-ভোজনের আয়োজন করতে হবে, কোনো কাজ করিয়ে মজুরির সাথে দিতে হবে মোটা বখশিস। কাজেই প্রতিমাসে টাকা ধার করতে হয় চড়াসূদে। যে কোনো ধরনের কাজ তো অভিজাত কবি গালিবের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল সম্রাট বাহাদুর শাহ-র দরবারে রাজকবি হওয়া। সেটাই ছিল তার মতো একজন বড় কবির উপযুক্ত পদ। যদিও বাহাদুর শাহ নামেমাত্র সম্রাট তখন। সবকিছুই ইংরেজদের হাতে। তবু সম্রাটের জন্য বার্ষিক সাড়ে ১১ লক্ষ টাকার যে ভাতার বন্দোবস্ত ইংরেজরা করেছিল, তা দিয়ে মোগল কেতার ঠাটবাট বজায় রাখার চেষ্টা বাহাদুর শাহের।

প্রশাসনিক বা সামরিক কোনো ক্ষমতা না থাকলেও সম্রাট ছিলেন সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। ইংরেজরা এই ব্যবস্থা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল কারণ পুরো সাম্রাজ্যে তখনো মানুষের মনে সম্রাটের প্রভাব ছিল ব্যাপক। তখনো যে কোনো বড় উৎসব শুরু করার সময় তাকে সাত রকমের শস্য, প্রবাল এবং রূপা দিয়ে ওজন করা হতো। তার সমান ওজনের সেইসব জিনিস বিলি করা হতো তারই নির্দেশে। কোরবানি ঈদের দিন তার নামে উট জবাই করে ঈদের দিনের সূচনা করা হতো। সম্রাটের জন্মদিনে দেওয়ান-ই-আম এ ছিল রাষ্ট্রীয় উৎসবের দিন। তিনি অসুস্থ হলে সমগ্র সাম্রাজ্যে দোয়া-প্রার্থনার আয়োজন করা হতো। সম্রাট আগামী সপ্তাহে কী কী করবেন তা জানিয়ে বুলেটিন প্রকাশ করা হতো। এমনকি তখনো সম্রাটের প্রাসাদ লালকেল্লায় কোনো ইংরেজ রাজপুরুষকেও অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হতো।

সম্রাট বাহাদুর শাহ নিজেও কবি ছিলেন। কবি হিসাবে তার তখল্লুস(ছদ্মনাম) ছিল ‘জাফর’। আমাদের কাছে তিনি বাহাদুর শাহ জাফর নামেই পরিচিত। মহাকবি সাদীর গোলেস্তাঁ গ্রন্থের একটি চমৎকার বিররণীও তৈরি করেছিলেন তিনি। আরেকটি তখল্লুস ছিল তাঁর। ‘শওখ রভ্’। এইনামে খেয়াল এবং ঠুমরি রচনা করতেন তিনি। দক্ষতা ছিল ক্যালিগ্রাফিতেও। চিত্রশিল্পের বড় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তিনি। রাজা জীবনরাম এবং হুসেন নাজির ছিলেন সম্রাটের প্রিয় চিত্রশিল্পী। বাগানবিলাসও ছিল তাঁর। অর্থকৃচ্ছ্রতার মধ্যেও দুইটি বাগান নির্মাণ করেছিলেন তিনি। তাস, দাবা, কুলবুলির লড়াই, ঘুড়ি ওড়ানো-- সবকিছুতেই দক্ষ ছিলেন তিনি। খাদ্যবিলাসী ছিলেন তিনি। আম ছিল সর্বাপেক্ষা প্রিয় ফল। সুন্দরী নারীদের প্রতি ছিলেন অতিমাত্রায় দুর্বল। সুন্দরীদের সাথে প্রচুর সময় কাটাতেন। অবশ্য তাঁকে যেহেতু রাজ্যের কোনো দায়িত্ব পালন করতে হতো না, সবকিছু করত ইংরেজরাই, তাই এইসব কাজে তিনি মনপ্রাণ ঢেলে দিতে পারতেন।

কিন্তু কাঙ্ক্ষিত রাজকবির পদটি যথাসময়ে পেলেন না গালিব। রাজকবি হলেন ইব্রাহিম জওখ। সেটি গালিবের জন্য দ্বিগুণ মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়াল। একে তো পদটি তাকে দেওয়া হলো না। তদুপরি ইব্রাহিম জওখের পদপ্রাপ্তিতে তিনি খুব অপমানিত বোধ করলেন। কারণ গালিবের চোখে জওখ ছিলেন নিতান্তই মধ্যম মানের কবি। তাছাড়া জওখ অভিজাত পরিবার থেকেও  আসেননি। সম্রাট বাহাদুর শাহ তার প্রতি অবিচার করেছেন-- এই অভিমান আমৃত্যু বহন করেছেন গালিব। জওখ-এর মৃত্যুর পর এই পদটি পেলেও সম্রাটের সাথে একটু দূরত্ব বজায় রেখেছেন তিনি।

রাজকবির পদ পেলেও তাকে ‘মালিক-উস-শুয়ারা’ (কবিশ্রেষ্ঠ) উপাধি দেওয়া হয়নি। তদুপরি বাদশার দরবার থেকে তার জন্য বরাদ্দকৃত ভাতা একেবারেই কম ছিল।

পুরো বছর পার না হতেই শুরু হলো ১৮৫৭ সালের সেই বিখ্যাত সিপাহী বিদ্রোহ, যাকে কার্ল মার্কস অভিহিত করেছিলেন ‘প্রথম ভারতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ’ বলে।

২.

গালিব সবসময় মনে করতেন উত্তরাধিকারসূত্রে তাঁর যে পরিমাণ ভাতা পাওয়ার কথা তার তুলনায় অনেক কম টাকা (৬২.৫০ টাকা) মাসোহারা হিসাবে নির্ধারণ করেছে ইংরেজরা। তিনি কুড়ি বছর ধরে আবেদন-নিবেদন করে গেছেন ইংরেজ রাজপুরুষদের কাছে। আদালতে মামলাও করেছেন। কিন্তু আদায় করতে পারেননি।

গালিবের মাত্র চার বছর বয়সের সময় পিতা আবদুল্লা বেগ মারা যান। গালিবকে লালন-পালন করেন নিঃসন্তান বড় চাচা নসরুল্লাহ বেগ। তিনি চাকুরি করতেন মারাঠাদের অধীনে। আগ্রাদুর্গ রক্ষার ভার ছিল তার উপর। কিন্তু ইংরেজরা আক্রমণ করলে তিনি প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইংরেজদের হাতে তুলে দেন দুর্গ। পুরস্কার হিসাবে ব্রিটিশরা তাকে চারশো ঘোড়সওয়ার সৈন্যের অধিনায়কত্ব এবং মাসে এক হাজার টাকা বেতন বরাদ্দ করে। একই সাথে শিরাক এবং সিরশা নামে ভরতপুরের দুইটি জেলা তালুক হিসাবে প্রদান করে।

নসরুল্লাহ বেগ হাতির হাওদা থেকে পড়ে মারা গেলে তার সম্পত্তি নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেয় এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য হিসাবমতো মাসোহারার ব্যবস্থা করে। কিন্তু গালিব মনে করতেন তার পাওনা বেশি। তাছাড়া এমন অনেককে তার চাচার পরিবারের সদস্য হিসাবে দেখানো হয়েছে যারা কেউ না। তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দিলে সঙ্গত কারণেই গালিবের মাসোহারার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যাবে। কিন্তু গালিবের আর্জিতে কান দেয়নি ইংরেজরা। তিনি আর্জি জানিয়ে চিঠির পর চিঠি লিখেছেন দিল্লির ব্রিটিশ রেসিডেন্টকে, আগ্রার লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে, কলকাতা কাউন্সিলের গর্ভর জেনারেলকে, লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কোর্ট অফ ডিরেক্টর বরাবর, এমনকি মহারানী ভিক্টোরিয়াকেও। আর্জির সাথে সাথে প্রত্যেকের প্রশস্তিসূচক কবিতা (কাসিদা) লিখে পাঠাতেন গালিব। এইজন্য সুদূর দিল্লি থেকে কলকাতাতেও এসেছিলেন তিনি। কিন্তু কাজ হয়নি কোনো। কোনো কবির লেখা প্রশংসাসূচক কবিতার কোনো মূল্য ইংরেজদের কাছে ছিল না। নবাব-বাদশাহদের মতো কবিতা শুনে ‘ইনাম’ দেবার কথা তাদের চিন্তাতেও ছিল না। কোনো কোনো ইংরেজ রাজপুরুষ একজন কবিকে কেন সম্মান দিতে হবে তার কোনো যুক্তিই খুঁজে পেত না। অপরপক্ষে গালিবও বুঝতে পারতেন না একজন সম্ভ্রান্ত কবিকে কেন আর সব সাধারণ মানুষের মতো করে দেখবে ইংরেজ রাজপুরুষরা! যদি কাব্যের স্বাদই উপভোগ করতে না জানে, তাদের মধ্যে শিল্পের সমঝদারিই যদি না থাকে, তাহলে তারা রাজা বা রাজপুরুষ হয় কীভাবে!   

এই কাসিদা বা রাজপুরুষদের সুনাম গেয়ে কবিতা লেখার ব্যাপারটি আমাদের কাছে নিন্দনীয় মনে হয়। কিন্তু সে যুগে সেটিও ছিল রেওয়াজ। সম্রাট, নবাব, ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি, ইংরেজ অফিসারদের নামে প্রশস্তিসূচক কাসিদা লিখতেন কবিরা। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে পেতেন খেলাত, বৃত্তি, চাকুরি, অনুদান। অসংখ্য প্রশস্তিমূলক কবিতা বা কাসিদা লিখেছেন গালিব। কিন্তু তার ভাগ্যে প্রতিদান জুটেছে খুব কম। তখন তো নবাব-জমিদারদের ক্ষয়িষ্ণু সময়। নিজেরাই নিজেদের ব্যয় নির্বাহে হিমসিম খাচ্ছেন। ইংরেজরা যাকে অনুগ্রহ করত, তার হয়তো কিছু বেশি শান-শওকত ছিল। কিন্তু তারাও কেন যেন গালিবকে খুব একটা অনুদান দেননি। অযোধ্যার নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ-র সুনজর পেয়েছিলেন গালিব। তবে তা অল্পদিনের জন্য। কারণ ইংরেজরা তার নবাবি কেড়ে নিয়ে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিল কলকাতার মেটিয়াবুরুজে।

গালিব সম্রাট বাহাদুর শাহ-র রাজকবি হবার অল্প কিছুদিন পরেই শুরু হয় সিপাহি বিদ্রোহ। সম্রাট ব্যক্তিগতভাবে এই বিদ্রোহে যোগদানের ব্যাপারে ছিলেন স্পষ্টতই অনিচ্ছুক। কিন্তু বেগম জিনাত মহল এবং পুত্রদের চাপে, তদুপরি যেহেতু দিল্লি তখন সিপাহিদের দখলে থাকায় তাদের চাপে বাধ্য হয়ে বিদ্রোহের নেতা হতে সম্মতি দিয়েছিলেন। দিল্লি চারমাস ছিল বিদ্রোহীদের দখলে। তারপর তা অধিকৃত হয় ইংরেজদের দ্বারা। ইংরেজরা সম্রাট বাহাদুর শাহকে নির্বাসনে পাঠায় রেঙ্গুনে। একই সাথে সিদ্ধান্ত নেয় পরবর্তীতে আর কাউকে সম্রাটের মর্যাদা বা পদ দেওয়া হবে না। বাহাদুর শাহ-র সন্তানদের প্রিন্স পদবি দেওয়া হয়। আর যারা বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিয়েছিল তাদের সবাইকে শাস্তি দেয়। ফাঁসি, নির্বাসন, জেল, অর্থদণ্ড, পদবি কেড়ে নেওয়া-- এই সবই ছিল শাস্তির অন্তর্ভুক্ত। মির্জা গালিব সম্রাটের সভাকবি। অতএব তাকেও আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল। তাকে বন্দি করা হয়নি। তবে বিচারকাজে হাজিরা দিতে হতো ইংরেজদের আদালতে। এই অবস্থা থেকে গালিব পরিত্রাণ পেলেন দাস্তানবু বইটি প্রকাশের মাধ্যমে। তার বন্ধুরা তড়িঘড়ি করে এই বইটি প্রকাশ করেছিল। এটি অনেকটা দিনপঞ্জি ধরনের বই। এই বইতে গালিব সিপাহি বিদ্রোহের দিনগুলোতে বিদ্রোহী সিপাহিদের অরাজকতার ঘটনা লিখেছেন। তাদের লুঠতরাজ, ইংরেজহত্যা, আইনের শাসন বিনষ্ট করার কথা লিখেছেন। বিদ্রোহী সিপাহিদের তীব্র নিন্দা করেছেন। আর প্রতি পৃষ্ঠায় এই আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন যে ইংরেজরা অবিলম্বেই দিল্লি পুনর্দখল করবে। প্রতিষ্ঠা করবে ন্যায়ের শাসন। তবে অবশ্য সম্রাট বাহাদুর শাহ-র নামে কোনো কটূকথা বইতে লেখা নেই।

রানী ভিক্টোরিয়ার মহিমা বর্ণনা করে তিনি লিখেছিলেন ‘রানী যেন তারকার মতো উজ্জ্বল’। লর্ড এলেনবোরোকে উল্লেখ করেছেন ‘আলেকজান্ডারের মতোই বিস্ময়কর’ এবং ‘ফারিদুমের মতো উজ্জ্বল’। স্যার জন লরেন্স গালিবের লেখায় ‘সূর্যের মতোই গৌরবমণ্ডিত এবং নক্ষত্রের মতোই আকাশে অধিষ্ঠিত’। যে ব্রিটিশ রাজপুরুষরা বিদ্রোহী সৈন্যদের হাতে নিহত হয়েছিলেন তারা গালিবের লেখায় ‘দুঃসাহসী, সুন্দর স্বভাব, নির্ভুল, উদার, ন্যায়পরায়ণ’। যে ইংরেজরমণীরা সিপাহিদের হাতে নিহত হয়েছিলেন, গালিবের বর্ণনায় তারা ‘সুন্দর মুখশ্রী, তন্বী রমণী, যাদের মুখগুলি চন্দ্রের মতো উজ্জ্বল আর দেহরেখা নিখাদ রুপোর মতো ঝকমকে’।

বিশেষভাবে বাঁধাই করা পাঁচটি কপি গালিব উপহার পাঠালেন পাঞ্জাবের প্রধান কমিশনার, গভর্নর জেনারেল, মহারানী ভিক্টোরিয়া, এবং দুই ব্রিটিশ সচিব বরাবর।  

অবশেষে এই বিনিয়োগের ফল পেলেন গালিব। ১৮৫৯ সালের মার্চ মাস থেকে ক্রমে ব্রিটিশদের দ্বারা পুনর্বাসিত হতে শুরু করলেন তিনি। গালিবের প্রশংসা করে লেফটেন্যান্ট গভর্নর একটি চিঠি পাঠালেন। বইটি যাতে বেশি বিক্রি হয় সেই পদক্ষেপও নিল ইংরেজরা। ১৮৬৩ সালে গালিবকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো তার সম্মানসূচক রাজকবি-র আসন এবং উত্তরীয়। তবে সম্রাট নয়, লর্ড এলগিনের আদেশে। এই সম্মানকে গালিব এবং তার বন্ধুরা মনে করলেন কবি হিসাবে গালিবের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি।

দাস্তানবুর পথ ধরে আসা এই স্বীকৃতি নিয়ে গালিবের কোনো সঙ্কোচ ছিল না। তিনি বলছেন-- ‘জন্মজন্মান্তর ধরে আমি শাসকপক্ষের ভাড়া করা কবি ও কথক। স্তুতিকাব্য লিখেছি, তাই পুরস্কারস্বরূপ পেয়েছি এই সম্মানিত উত্তরীয় এবং প্রতিষ্ঠা।’

আবার বন্ধুকে লেখা চিঠিতে সেই গালিবই লিখছেন-- ‘জীবনের অনেকটাই নষ্ট হলো মূঢদের উদ্দেশে স্তুতিকাব্য রচনা করে।’

তাই আসল গালিবকে বাস্তব জীবনে নয়, খুঁজতে হয় তার অসাধারণ কবিতাগুলোর মধ্যেই।