ভারতের উত্তর প্রদেশে জমির বিরোধে গুলিতে নিহত ১০ জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বাধা দিয়েছে পুলিশ।
Published : 19 Jul 2019, 05:37 PM
গত বুধবার রাজ্যের সনভাদ্রা জেলার উম্বাহ গ্রামে গুলির ওই ঘটনা ঘটে। হতাহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার সকালে প্রিয়াঙ্কা সনভাদ্রা জেলায় যেতে চাইলে পথে মির্জাপুরে পুলিশ তার গাড়িবহর আটকে দেয়।
প্রতিবাদে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা তার কর্মীদের নিয়ে সড়কে বসে পড়েন। পরে একটি সরকারি গাড়িতে করে তাকে সেখান থেকে জোর করে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানায় এনডিটিভি।
Mirzapur: Priyanka Gandhi Vadra, Congress General Secretary for Uttar Pradesh (East) and party workers sit on a dharna at Chunar Guest House. She says,"I will go to Sonbhadra (where firing over a land dispute claimed 10 lives) & meet the victims." pic.twitter.com/3StDmtorym
— ANI UP (@ANINewsUP) July 19, 2019
এনডিটিভিকে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “আমি শুধু ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, যাদের প্রিয়জনকে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের বয়সের একটি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে এবং সে হাসপাতালে পড়ে আছে। বলুন, কোন আইনের বলে আমাকে আটকে দেওয়া হয়েছে।”
ভারতে জাতীয় নির্বাচনের সময় থেকে এটা উত্তর প্রদেশে প্রিয়ঙ্কার দ্বিতীয় সফর। তিনি ওই রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের কংগ্রেস প্রধানের দায়িত্বে আছেন।
এনডিটিভি জানায়, শুক্রবার সকালে প্রিয়াঙ্কা উড়োজাহাজে করে বারানসি পৌঁছান এবং সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংঘর্ষে আহতদের দেখতে যান।
তারপর তিনি বারানসি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে সনভাদ্রার পথে রওয়ানা হন। প্রিয়াঙ্কা রওয়ান হওয়া পর খবর বের হয়, স্থানীয় প্রশাসন সনভাদ্রা জেলায় জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সনভাদ্রার কাছে মির্জাপুরে প্রিয়াঙ্কার গাড়িবহর আটকে দেওয়ার পর তারা সড়কে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তিনি বলেন, “আমি এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসে আছি, কেউ কী দয়াকরে আমাকে এখানে আটকে দেওয়ার নির্দেশ নামা দেখাবেন।”
পরে একটি সরকারি গাড়িতে করে প্রিয়াঙ্কাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, “আমি জানি না তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেকোনো জায়গায় যেতে প্রস্তুত।”
গত বুধবার প্রায় ৩৬ একর জমি নিয়ে বিরোধের সময় গোলাগুলিতে ১০ জন নিহত এবং ২৪ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
গ্রাম প্রধান যোগ দত্ত এবং তার দলবলের সঙ্গে আদিবাসী কৃষকদের এ সংঘর্ষ হয়। যোগ প্রায় দুইশ লোক ও ৩২টি ট্রাক্টর নিয়ে ওই দিন জমি দখল করতে গিয়ে কৃষকদের বাধা মুখে পড়েন।
এনডিটিভি জানায়, বাধার মুখে যোগের দলবল কৃষকদের গুলি করতে শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা নির্বিচারে গুলি চালায়, যা ভারতের গত কয়েক বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তহিম করা ঘটনা।
দুই দিনের তল্লাশির পর পুলিশ শুক্রবার যোগকে গ্রেপ্তার করেছে। যোগের দাবি এক দশক আগে তিনি স্থানীয় একটি অভিজাত পরিবারের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন।
গণহত্যার এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট ৭৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। যোগ ও তার ভাইয়ের নামও তালিকায় রয়েছে।
গুলির ঘটনার দিন এক টুইটে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, “বিজেপি শাসিত রাজ্যে অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস এতটাই বেড়ে গেছে যে সেখানে দিনেদুপুরে হত্যার ঘটনা অহরহই ঘটছে।
“সনভাদ্রা জেলার উম্বাহ গ্রামে ভূমিদস্যুরা তিন নারীসহ গণ্ড আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৯ জনকে হত্যা করেছে, যা শুনে হৃদয় কেঁপে উঠছে। প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রী সবাই ঘুমাচ্ছে। এভাবেই কী ওই রাজ্য অপরাধ মুক্ত হবে?”
অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, অতীতে কংগ্রেসই ভূমিদস্যুদের প্রশ্রয় দিয়েছে।