বলা হয়, সৌরজগতের যে গ্রহটি নিয়ে মহাকাশ গবেষকরা সবচেয়ে কম অনুসন্ধান করেছেন সেটি হলো মার্কিউরি, বাংলায় যে গ্রহটির নাম বুধ। এবার সেই মার্কিউরির ভূপৃষ্ঠের ছবি তুলে পাঠিয়েছে ইউরোপ ও জাপানের যৌথ অভিযানের মহাকাশযান। ছবি বিশ্লেষণ করে চাঁদ আর মার্কিউরির ভূপৃষ্ঠের মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছেন গবেষকরা।
Published : 04 Oct 2021, 03:51 PM
মার্কিউরির নতুন ছবিগুলো এসেছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা)’র যৌথ অভিযান ‘বেপিকলোম্বো’ থেকে। ২০১৮ সালে ইউরোপ থেকে মহাকাশে পাঠানো হয় বেপিকলোম্বো। ওই মিশনের কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে ‘মার্কিউরি প্ল্যানেটারি অরবিটার’ এবং ‘মার্কিউরি ম্যাগনেটোস্ফেরিক অরবিটার’ মহাকাশযান দুটি।
২০২৫ সালের শেষ ভাগে মার্কিউরির কক্ষপথে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বেপিকলোম্বোর। মিশনটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে মার্কিউরির ভূপৃষ্ঠ এবং এর গঠন উপাদান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। সূর্যের এতো কাছে একটি গ্রহ কীভাবে বিকশিত হলো, সেটি এখনও একটি বড় প্রশ্ন মহাকাশ গবেষকদের কাছে। সাড়ে তিনশ’ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ছয়শ’ ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করে যায় গ্রহটির তাপমাত্রা।
ইএসএ গ্রহটির ভূপৃষ্ঠের এই অবস্থার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, “একটি তত্ত্ব হচ্ছে, গ্রহটি হয়তো কোনো এক সময় আরও বড়ও কোনো কিছুর অংশ ছিলো যা দানবীয় কোনো ধাক্কার ফলে আলাদা হয়ে গিয়েছিলো। তারপর এতে রয়ে গেছে বেশ বড় একটি লোহার কোর (iron core)। সেখান থেকেই গ্রহটির চৌম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন হয়। আর বাইরের দিকে রয়েছে পাতলা পাথুরে খোলস।”
“এর ভূপৃষ্ঠ প্রায় সবখানেই অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে এবং এর গঠন সম্পন্ন হয়েছে কয়েকশ’ কোটি বছর আগে লাভা উদগীরণের মাধ্যমে। ঠাণ্ডা হওয়া লাভা প্রবাহের উপর আছড়ে পড়া ধূমকেতু আর গ্রহাণুর কারণে তৈরি হয়েছে দানবীয় গর্তগুলো। কম করে হলেও মার্কিউরির ভূপৃষ্টের একশ’টি স্থানে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট জ্বালামুখও আছে”।
শুক্রবার মার্কিউরির পাশ দিয়ে উড়ে গেছে বেপিকলোম্বো। গ্রহটির কক্ষপথে প্রবেশের আগে মোট ছয়বার এর পাশ দিয়ে উড়ে যাবে মহাকাশযানটি। কক্ষপথে প্রবেশের জন্য গ্রহটির নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর নির্ভর করবে বেপিকলোম্বো।
ইএসএ জানিয়েছে, বেপিকলোম্বো মার্কিউরির যতো কাছে যেতে থাকবে, ততো ভালো রেজুলিউশনের ছবি পাওয়া যাবে মহাকাশযানটি থেকে।