কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ইউজার ইন্টারফেইস গুরু ল্যারি টেসলারের জীবনাবসান হয়েছে সোমবার। তার উদ্ভাবিত কাট, কপি ও পেস্ট সম্ভবত দৈনন্দিন ব্যবহারে পারসোনাল কম্পিউটারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ফিচার।
Published : 20 Feb 2020, 12:06 PM
কর্মজীবনে গুরুত্বপূর্ণ সময় অ্যাপলে কাজ করা টেসলারের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। - খবর গিজমডোর।
অ্যাপলে ১৯৮০ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত কাজের সময় টেসলার ইউজার ইন্টারফেইসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম যোগ করেন যা নির্ধারণ করে দেয় একটি সফটওয়্যার পর্দায় কেমন আচরণ করবে। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ওয়ার্ড প্রসেসর চালানোর সময় কোন কি চাপলে পর্দায় তার ফলাফল কেমন হওয়া উচিৎ সেটি নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন টেসলার। বিষয়টি এখন আমরা স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নেই।
টেসলার জন্মগ্রহণ করেছিলেন নিউ ইয়র্কে, ১৯৪৫ সালে। পরবর্তীতে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ালেখা করেন তিনি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বিষয়েও নিজের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন টেসলার। তখনও অবশ্য প্রযুক্তিটি নিয়ে এতো গবেষণা শুরু হয়নি। ১৯৭৩ সালে ‘জেরক্স পলো আল্টো রিসার্চ সেন্টারে’ (পিএআরসি) চাকরি নেন তিনি।
উল্লেখ্য, বর্তমান কম্পিউটারের গ্রাফিকাল ইন্টারফেইসের পথচলার শুরুটা হয়েছিলে জেরক্স পিএআরসি-এর হাত ধরেই।
টেসলার ‘জেরক্স পলো আল্টো রিসার্চ সেন্টারে’ (পিএআরসি) কর্মরত থাকার সময়ে টিম মটের সঙ্গে মিলে তৈরি করেছিলেন ‘জিপসি’ নামের ওয়ার্ড প্রসেসর। ওই ওয়ার্ড প্রসেসর থেকেই প্রযুক্তি বিশ্ব প্রথমবারের মতো উপহার পেয়েছিল ‘কাট’, ‘কপি’ ও ‘পেস্ট’ ফিচারগুলো। লেখাকে কেটে এক জায়গা থেকে নিতে, প্রতিলিপি করতে এবং পুনরায় বসাতে ব্যবহার করা হয় ফিচার তিনটিকে।
পরে চাকরি বদলে অ্যাপল কম্পিউটারে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮০ সালে, সেখানে চাকরি করেছেন ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানটির আভ্যন্তরীন ‘লোকাল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম’ অ্যাপলনেট-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন, অ্যাপলের প্রধান গবেষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
অ্যাপল ছেড়ে যাওয়ার পর ‘স্টেজকাস্ট সফটওয়্যার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন টেসলার। শিশুদের যাতে আরও সহজে প্রোগ্রামিং ধারণাগুলো দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করত প্রতিষ্ঠানটি। এরপর, ২০০১ সালে অ্যামাজনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটিতে ‘শপিং এক্সপেরিয়েন্স’ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন টেসলার।