ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখল পিএসজি। কিন্তু দ্বিতীয় গোলের দেখা আর মেলে না। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে লাল কার্ড দেখলেন গোলরক্ষক, একটু পর দল খেয়ে বসল গোল। তেতে ওঠা নঁতের বিপক্ষে হোঁচট খাওয়ার মঞ্চ যেন প্রস্তুত। সেখান থেকে দলকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দিলেন লিওনেল মেসি।
Published : 20 Nov 2021, 11:00 PM
ঘরের মাঠে শনিবার লিগ ওয়ানের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপের গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধে কোলো মুয়ানি সমতা টানার অল্প কিছুক্ষণ পর তাদের আত্মঘাতী গোলে আবারও এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। শেষে জয় নিশ্চিত করেন মেসি।
প্রথমার্ধে রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত নঁত দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে জেগে ওঠে। ম্যাচ শেষে তাই গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ায় দুই দলই প্রায় সমানে সমান; পিএসজির ১৪ শটের সাতটি ছিল লক্ষ্যে, আর নঁতের ১২ শটের ছয়টি লক্ষ্যে।
আন্তর্জাতিক বিরতির আগে সবশেষ লিগ ওয়ানে ম্যাচেও জালের দেখা পেয়েছিলেন এমবাপে। মাঝে জাতীয় দলের হয়ে তো মেতেছিলেন গোল উৎসবে; বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাজাখস্তানের জালে চার গোল করার পর ইউক্রেনের বিপক্ষে করেন একটি। এবার ক্লাবে ফিরে দুই মিনিটের মাথায়ই পেলেন আবারও জালের দেখা।
হঠাৎ পাওয়া বাঁ ঊরুর চোটে নেইমার তিন দিন আগে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারেননি আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। পিএসজির এই ম্যাচেও তাকে ঘিরে অনিশ্চয়তা ছিল যথেষ্ট। কিন্তু শুরুর একাদশেই নামলেন তিনি, প্রথম মিনিট থেকে দারুণ উজ্জীবিতও ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
১৮তম মিনিটে তার সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করেই ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুবর্ণ সুযোগ পান মেসি। সতীর্থের পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে জোরালো শটও নেন আর্জেন্টাইন তারকা; কিন্তু গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে শট নিতে পারেননি তিনি। দারুণ নৈপুণ্যে হাত বাড়িযে রুখে দেন আলবাঁ লাফুঁ।
অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে পিএসজি। ঘর সামলে পাল্টা আক্রমণে ওঠার তেমন কোনো সুযোগই পাচ্ছিল না নঁত।
২৯তম মিনিটে এমবাপের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে ডি-বক্সে ঢুকে শট নেন নেইমার, সময়মতো এগিয়ে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন লাফুঁ। ১০ মিনিট পর মেসির জোরালো শটও ঠেকিয়ে দেন ফরাসি এই গোলরক্ষক।
এর মাঝে আবারও হতাশ করেন মেসি। দারুণ পজিশনে বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তিনি। এত এত সুযোগ নষ্টের মাঝে ৬৫তম মিনিটে বড় ধাক্কাটি খায় পিএসজি। প্রতি-আক্রমণে দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে যান ব্লাঁস। তাকে রুখতে বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে কী বুঝে লাফিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাউল করে বসেন কেইলর নাভাস। সঙ্গে সঙ্গে কোস্টা রিকার এই গোলরক্ষককে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
বাধ্য হয়ে নেইমারকে তুলে তৃতীয় পছন্দের গোলরক্ষক সের্হিও রিকোকে নামান কোচ। গোলপোস্টের নিচে দাঁড়ানোর দুই মিনিট পরই দারুণ এক সেভ করেন তিনি। ফিরিয়ে দেন ব্লাসের শট।
তবে ৭৬তম মিনিটে ঠিকই গোল পেয়ে যায় সফরকারীরা। সতীর্থের ক্রসে মুয়ানির হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন রিকো, তবে বল হাতে রাখতে পারেননি। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আলগা বল ব্যাকহিলে লক্ষ্যে পাঠান তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ড। এবারও বল ফিরিয়েছিলেন গোলরক্ষক, তবে গোললাইন টেকনোলজিতে পরিষ্কার হয় আগেই বল গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল।
জাগে অঘটনের শঙ্কা, যদিও সেটি বেশিক্ষণের জন্য নয়। পাঁচ মিনিট পর সৌভাগ্যবশত গোলে আবারও এগিয়ে যায় পিএসজি। এই গোলেও জড়িয়ে মেসির নাম। ডি-বক্সে বাঁ দিকে সতীর্থের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান আর্জেন্টাইন তারকা, স্লাইডে সেটাই আটকাতে গিয়ে নিজেদের জালে পাঠান ডিফেন্ডার দেনিস আপিয়া।
বার্সেলোনা ছেড়ে গত অগাস্টে পিএসজিতে আসার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিনটি গোল পেলেও দলটির জার্সিতে লিগ ওয়ানে গোল পাচ্ছিলেন না। অবশেষে কাটল খরা।
১৪ ম্যাচে ১২ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে পিএসজি। ১৩ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে লস।
১৪ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে নঁত।