পঞ্চগড়ে ২২ দিনে এক পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
Published : 02 Jul 2022, 09:07 PM
বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের গাইঘাটা সেনপাড়া গ্রামে ৮ জুন, ১৯ জুন ও ৩০ জুন এই তিনজন মারা যান।
এরা হলেন গাইঘাটা সেনপাড়া গ্রামের প্রয়াত অন্যপ্রসাদ রায়ের বড় ছেলে বিমল চন্দ্র রায় (৩০), মেজ ছেলে রতন চন্দ্র রায় (২৭) এবং বিমলের ভাতিজা মিঠুন চন্দ্র রায় (১৬)। মিঠুনের বাবা কৃষ্ণ চন্দ্র বিমলের চাচাত ভাই।
তবে তাদের বংশানুক্রমিক কোনো রোগ রয়েছে কিনা জানতে প্রয়োজনে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হতে পারে বলে মনে করেন বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা – ইউএনও সোলেমান আলী।
পরিবারের সদস্যদের বরাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন জানান, গত ৮ জুন অসুস্থ অবস্থায় মারা যান মিঠুন চন্দ্র রায়। ২০ জুন ছিল তার শ্রাদ্ধের দিন। কিন্তু ১৯ জুন রাতে অসুস্থ হয়ে মিঠুনের কাকা রতন মারা যান। ১ জুলাই রতনের শ্রাদ্ধের আগের দিন [৩০ জুন] রাতে হঠাৎ মারা যান তার বড় ভাই বিমল।
মাত্র ৮ মাস আগে স্বামী হারানো নির্বাক মা জয়ন্তী রানী কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই ছেলেকে হারিয়ে অনেকটা নির্বাক ৷
বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন বিমলের নববধূ অষ্টমনি রানী৷ রতনের স্ত্রী চিত্র দুই শিশু সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন বলে বিলাপ করছেন।
মিঠুনের বাবা কৃষ্ণচন্দ্র বলেন, “আমার ছেলে স্থানীয় বিদ্যালয় দশম শ্রেণিতে পড়ত। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল৷ হঠাৎ আমার ছেলে মারা যাওয়ায় আমার স্বপ্ন শেষ।”
বিমল ও রতনের ছোট ভাই জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বলেন, “আমার বাবা মারা যাওয়ার ৮ মাস হলো মাত্র৷ এর মধ্যেই আমার দুই ভাই মারা গেল। আমি এখন অভিভাবক শূন্য হয়ে গেলাম৷ জানি না ভবিষ্যত কী হবে। তবে আর কাউকে হারাতে চাই না।”
সমাজের বিত্তবানরা এই পরিবারের পাশে দাঁড়ালে তাদের অনেক উপকার হবে বলে তিনি মনে করেন।
বোদার ইউএনও সোলেমান আলী বলেন, “খবর নিয়ে জেনেছি যারা মারা গেছে তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েকদিনের ব্যবধানে তিন জনের মৃত্যুতে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তারা যদি মনে করে তাদের কোনো বংশানুক্রমিক রোগ রয়েছে তাহলে প্রয়োজনে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, “এক পরিবারের মৃত্যু তো স্বাভাবিকভাবে হয়েছে বলে শুনেছি। তাবে তারা কোনো চিকিৎসা নেয়নি।”