বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভসহ অবস্থান ধর্মঘট করেছেন।
Published : 01 May 2022, 11:45 AM
নগরের ভোগড়া এলাকায় জিএম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা শনিবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। তারা কারখানার ভেতরেই রাত যাপন এবং শুকনো খাবার খেয়ে ইফতার ও সেহেরি সারেন।
রোববার মে দিবসের সকালেও শ্রমিকদের কারখানার ভেতরে অবস্থার করতে দেখা গেছে।
কারখানার শ্রমিক স্বপ্না বলেন, “শনিবার লাঞ্চের পর কারখানায় এপ্রিলের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। বেতন ও ঈদ বোনাস নিয়ে বাড়ি যাওয়ার আনন্দ-উদ্দীপনা মনে নিয়ে সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। কিন্তু দুপুরের আগেই কারখানার কর্মকর্তারা আমাদের বেতন-বোনাস না দিয়ে একে একে গা ঢাকা দেন।
“এরপর শ্রমিকরা যখন বেতন-বোনাসের জন্য অপক্ষো করতে থাকে, তখন তারা জানতে পারেন তাদের পাওনা দেওয়ার মতো কারখানার কেউ নেই। এ কথা শুনে শ্রমিকদের ঈদের আনন্দে ছেদ ঘটে; তাদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। তাই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।”
শ্রমিক আজিজুল হকের বাড়ি গাইবান্ধায়। বেতন-বোনাস নিয়ে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে তার।
তিনি বলেন, “স্ত্রী-সন্তানেরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আর আমি কারখানায় বেতন-বোনাসের জন্য খেয়ে-না খেয়ে বসে আছি।”
এ বিষয়ে কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন দাবি করেন, এবার ঈদের আগে ‘ব্যাংকিং সমস্যার কারণে টাকা তুলতে না পারায়’ কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, তারাও কারখানার মালিককে খুঁজছেন। কিন্তু তাকে পাচ্ছেন না। তাই রোববার দুপুরের মধ্যে বিকল্প উপায়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গাজীপুরে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএসহ ৩৭টি বিভিন্ন কারখানায় এপ্রিলের ১৫দিনের বেতন এবং ২৮টি কারখানায় ঈদ বোনাস বকেয়া রয়েছে বলে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের এসপি মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ৩০ এপ্রিল রাত ৯টা পর্যন্ত বিজিএমইএ’র ৭৭৮টি কারখানার মধ্যে ৮টি, বিকেএমইএ’র ১২৯টির মধ্যে ৪টি, বিটিএমএ’র ১২৭টির মধ্যে ১টি এবং অন্যান্য ১১৮৬টি কারখানার মধ্যে ২৫টি কারখানায় সরকারি সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী এপ্রিলের ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়নি।
এছাড়া বিজিএমইএ’র ৮টি, বিকেএমইএ’র ৪টি, বিটিএমএ’র ১টি এবং অন্যান্য ১৫টি কারখনায় কোন ঈদ বোনাস বাকি রয়েছে।