গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ডুমরিয়া ইউনিয়নে মধুমতি নদীর ভাঙনে ভূমিহীন ৬৫টি পরিবারের বাড়িঘর ও সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে।
Published : 02 Apr 2022, 01:28 PM
ডুমরিয়া ইউয়িনের বাসিন্দারা বলছেন, গত ৩০ বছর ধরে অনবরত মধুমতির পাড় ভাঙতে থাকায় ঘরবাড়ি ও কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অনেক পরিবার বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি হারিয়ে ভূমিহীন হয়েছেন। কোন কোন পরিবার আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করছেন। দ্রুত নদী ভাঙন ঠেকানো না গেলে ৬৫ পরিবারের মাথা গোঁজার জায়গাও হারাবে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এর আগে ইউএনও, জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিলেও কোন সমাধান মেলেনি।
ডুমুরিয়া ইউপির চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা বেগম বলেন, “স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পরিবার নিয়ে এখানে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। আমাদের বাড়িটি সাত কাঠা জায়গা জুড়ে ছিল। বাড়িতে উঠান, বিভিন্ন ফল গাছ ও ধানের জমি ছিল। সব নদীর ভাঙনে নেমে গেছে। এখন শুধু বাড়িটাই আছে। এছাড়া বৈশাখ মাসে ঝড়-বৃষ্টিতে নদীর পানি ঘরে উঠে যায়। আর ভাদ্র মাসে পানি সবসময় বারান্দায় থাকে।”
তিনি আরও বলেন, চরপাড়া গ্রামে অনেক পরিবার বসবাস করত। নদীর ভাঙনে সব বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই এখন তারা বিভিন্ন স্থানে ও কিছু লোক সরকারি ঘরে বসবাস করছে।
একই গ্রামের হাসিবুর রহমান বলেন, “এই নদীর ভাঙন ছোটবেলা থেকেই দেখছি। আমাদের যত জায়গা জমি ছিল সব নদীর মধ্যে চলে গেছে। তাই আমরা এখন ভাড়া বাড়িতে দিন কাটাচ্ছি। সরকারের কাছে আমাদের সবার আবেদন এখানে এমন কিছু একটা করে দিক যাতে ভাঙন রোধ করা যায়।”
একই গ্রামের বৃদ্ধ আতিয়ার তালুকদার বলেন, “এই ভাঙনের জায়গা দেখতে এর আগে এসিল্যান্ড, ইউএনও, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এসেছেন। তারা ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন কাজ হয় নাই। সবাই শুধু আশ্বাস দিয়ে যায়।”
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম বলেন, “কয়েকমাস হল আমি টুঙ্গিপাড়ায় যোগদান করেছি। নদী ভাঙনের ব্যাপারে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক ভাঙন ঠেকাতে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলছেন, তিনিও সাংবাদিকদের মাধ্যমে নদী ভাঙনের বিষয়টি জেনেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।