চারলেনে উন্নীতকরণ ও সংস্কার কাজ চলার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে যানবাহনের যানজট ও ধীরগতি এ পথে চলাচলকারীদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Published : 16 Mar 2022, 07:32 PM
এতে এ মহাসড়কে চলাচলকারী উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে জেলাগুলোর যানবাহন চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ভোগান্তি এড়াতে অনেক দূরপাল্লার যানবাহন মহাসড়ক ছেড়ে সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে মুলিবাড়ি দিয়ে চলাচল করছে; এ কারণে আঞ্চলিক সড়কেও যানজট তৈরি হচ্ছে।
বুধবারও মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের হাটিকুমরুল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলাচল করে খুব ধীর গতিতে।
সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. সালেকুজ্জামান সালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য রাস্তার দুপাশে খোঁড়াখুড়ি ও মাটি ভরাটের কাজ চলছে। পাশাপাশি পুরাতন নলকা সেতুর পাশে আরেকটি নতুন সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সেতুর পূর্ব পাশের পুরাতন সড়কটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে যানবাহনগুলো এক লেনে চলছে। এতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের হাটিকুমরুল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট ও ধীরগতি লেগেই আছে।
প্রতিদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অবস্থা আরও প্রকট আকার ধারণ করছে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থানার ওসি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, যতদিন মহাসড়কে নির্মাণ কাজ চলবে, ততদিন মহাসড়কে যানজট ও ধীরগতি লেগেই থাকবে। দিনের বেলা মহাসড়কে ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন কম চলার কারণে চাপ একটু কম থাকে। কিন্তু রাতে ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহনে কারণে মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। তখন ভোগান্তিও বাড়ে।
“আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মহাসড়ক নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা সবাইকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।”
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের চারটি মহাসড়কের যানবাহন সলঙ্গার হাটিকুমরুলে এসে বঙ্গবন্ধু সংযোগ মহাসড়কে যুক্ত হওয়ায় এমনিতেই এ সড়কে যনাবাহনের চাপ অনেক বেশি থাকে। এ অবস্থায় মহাসড়ক উন্নীতকরণের কাজ চলায় খুবই ধীরগতিতে যানবাহনগুলো চলাচল করছে।
“আমরা রাতদিন নিরলসভাবে কাজ করে রাস্তা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। তবুও সমস্যা দূর করা যাচ্ছে না।”
ঢাকা থেকে বগুড়াগামী বাস চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, “মহাসড়কে যানজটের কারণে সিরাজগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। যানবাহনের চাপের কারণে এ রাস্তায়ও কোথাও কোথাও যানজট লেগে যাচ্ছে। তারপরও মহাসড়কের তুলনায় এদিক দিয়ে যেতে সময় কম লাগছে।”
দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী বাসের যাত্রী মিরাজ উদ্দিন বলেন, “হাটিকুমরুল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত যেতে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগার কথা। অথচ মহাসড়কে সংস্কার কাজ চলার কারণে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে।”
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ১৯ দশমিক ০৮ কিলোমিটার অংশের কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হেগো-মীর আখতারের জয়েন্ট ভেঞ্চার।
এ প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার মো. একলাস উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মহাসড়কটি সংস্কারে প্রথমে ৩ বছর সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। করোনার কারণে কাজ বন্ধ থাকায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
“আমরা ২০১৯ সালের এপ্রিলে কাজ শুরু করেছি। ২০২৩ সালের এপ্রিলে কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে ৫০ ভাগ মূল সড়ক নির্মাণ শেষ হয়েছে। আর সেতু, কালভার্ট, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস ও ওভারপাস তৈরি ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। এসব স্থানে বর্তমানে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।”
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার বলেন, “ঢাকা প্রধান অফিস থেকে এ প্রকল্পের টেন্ডার করা হয়েছে। নির্মাণ কাজের দেখভালও তারাই করছেন। আমাদের কাছে প্রকল্পের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।”