যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি থেকে এক পরিবারের ছয় সদস্যের মরদেহ উদ্ধারের পর পাবনায় স্বজনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
Published : 06 Apr 2021, 09:45 PM
টেক্সাসের ডালাস সংলগ্ন এলেন সিটির বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় সোমবার ভোর রাতে।
নিহতরা হলেন পাবনার দোহার পাড়ার প্রয়াত আবুল মোসলেম শেখের স্ত্রী আলতাফুন্নেসা (৭৭), তার মেয়ে আইরিন ইসলাম ( ৫৫), আইরিনের স্বামী তৌহিদুল ইসলাম (৫৬), মেয়ে পারভিন তৌহিদ ( ১৯) ও দুই ছেলে তানভির তৌহিদ (২১) ও ফারহান তৌহিদ (১৯)।
স্বজনরা জানান, পাবনা শহরতলীর দোহারপাড়ার মেয়ে আইরিন ইসলামের সঙ্গে প্রায় ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় পুরান ঢাকার তৌহিদুল ইসলামের।
দুই বছর আগে পাবনা থেকে মা আলতাফুন্নেসাকে ডালাস নিয়ে যান আইরিন।
আকস্মিক এ মৃত্যুর খবরে সকাল থেকেই ওই বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন-প্রতিবেশীরা। তাদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
‘বিষণ্নতা থেকে’ পরিবারটির দুই তরুণ সহোদর তাদের মা-বাবা, নানি ও একমাত্র বোনকে হত্যার পর তারাও আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের ধারণা।
তবে স্বজনরা এই মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন।
“ছেলেমেয়েরা বাবা-মায়ের পাশাপাশি আমার মায়েরও [তাদের নানি] যত্ন নিত। এমন ছেলেরা বাড়ির সবাইকে হত্যা করেছে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।”
আলতাফুন্নেসার ছোট ছেলে আবুল কালাম আজাদ হিরণ বলেন, “মা গত বছর আমেরিকা বোনের বাড়ি গিয়েছেন। করোনার কারণে আটকে গিয়েছিলেন। আগামী ৭ এপ্রিল তার পাবনায় ফেরার কথা ছিল। পরিবারের সবাই মিলে মাকে বিদায় জানাতে টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে আমার ভাগ্নি পারভিনকেও নিয়ে এসেছিল।”
হিরণ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
টেক্সাস স্টেটের ডালাসসংলগ্ন এলেন সিটি পুলিশের সার্জেন্ট জন ফেলী জানান,স্থানীয় সময় সোমবার ভোর রাতে এলেন সিটির বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
“সম্ভবত শনিবার নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। ১৯ বছর বয়সী একজনের ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে ঘটনার সঙ্গে রয়েছে হতাশার ধারাবিবরণী।”
এক সময়কার পুরান ঢাকার বাসিন্দা তৌহিদুল আট বছর আগে টেক্সাসের এই সিটিতে বসতি গড়ার আগে নিউইয়র্কে বাস করতেন। তিনি সিটি ব্যাংকে চাকরি করতেন।
তৌহিদের পরিচিত পর্যটন ব্যবসায়ী শাহীন হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো কারণে তৌহিদের দুই ছেলেই বিষণ্নতায় আক্রান্ত ছিল।”
“আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে গোটা পরিবার সারাটি জীবন কষ্ট পাবে। সেটি চাই না। সেজন্যে পরিবারের সকলকে নিয়ে মারা যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বড় ভাইকে শামিল করলাম। দুই ভাই গেলাম বন্দুক ক্রয় করতে। আমি হত্যা করব ছোটবোন আর নানীকে। আমার ভাই হত্যা করবে মা-বাবাকে। এরপর উভয়ে আত্মহত্যা করব। কেউ থাকবে না কষ্ট পাবার।”
ফারহানের বড়োভাই দোকানে গিয়ে অস্ত্র কিনেছেন বলেও তাতে লেখা ছিল।