খুলনায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি জমিতে তরমুজের আবাদ হলেও পানির সঙ্কটে ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না চাষিরা।
Published : 04 Apr 2021, 11:42 AM
চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা জানান, জেলার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, রূপসা, পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এ ফলের চাষ হলেও সেচের পানির অভাবে কৃষকের লাভের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, গত বছর জেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন তরমুজ হয়। চলতি বছর প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় সবচেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হয়।
কৃষি কর্মকর্তা হাফিজ বলেন, জেলার উৎপাদিত তরমুজের ৭০-৭৫ শতাংশই চাষ হয় দাকোপ উপজেলায়। গত বছর এই উপজেলায় ১ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ হয়েছিল। এবার ৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
প্রচণ্ড তাপে এবং দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠের ভেতরের খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। অনেকে ছোট ছোট কুয়ো কেটে প্রথমদিকে সেখান থেকে সেচ দিয়েছেন। কিন্তু সে পানির উৎসগুলোও এখন শুকিয়ে গেছে। অনেক কৃষক দূরের নদী থেকে পাম্প ও পাইপের মাধ্যমে ক্ষেতে পানি দিচ্ছেন।
দাকোপ ইউনিয়নের কাঁকড়াবুনিয়া গ্রামের স্বপন মণ্ডল বলেন, তিনি ১০ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। কিন্তু ক্ষেতে সেচ দিতে পানি পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, “পাশের কাঁকড়াবুনিয়া, কালীতলা খালেও একদম পানি নেই। কয়েক বছর ধরে খালগুলোতে চরা পড়ে আছে। খনন করা হয় না। এলাকার প্রায় চার হাজার কৃষক পানি পাচ্ছেন না।”
রাসখোলা গ্রামের নিরাপদ রপ্তান বলেন, ১২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করছেন তিনি। লাখ টাকার ওপর খরচ হয়ে গেছে। পানির অভাবে এর মধ্যেই তিনটা ক্ষেত মরে গেছে। অন্যটিতেও গাছ মরা শুরু করেছে।
দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, “সেচের পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবার। বৃষ্টি না হলে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে তরমুজ ক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য কোনো পানি থাকবে না।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসিকে) ১০২টি খাল খননের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা কিছু খননকাজ শুরু করেছে। স্থানীয় সমস্যার কারণে কিছু খনন করা যাচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে সব খাল খনন করা গেলে পানির সমস্যা কমবে।