উত্তরের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় আগুন জ্বালিয়ে তার পাশে শুয়ে রাত কাটিয়ে দেয় আশ্রয়হীন একদল ছিন্নমূল মানুষ।
Published : 22 Jan 2021, 11:15 PM
আগুনের কুণ্ডলি ঘিরে বসে থাকেন বয়োজ্যেষ্ঠরা। তাদের কোলের গরমে ওম খুঁজে পায় শিশুরা। কখনও একরাশ হিম বাতাস নিয়ে পাশ দিয়ে ছুটে যায় দ্রুতগামী ট্রেন। বাতাসের ঝাপটায় নিভে যেতে চায় খড়কুটোর আগুন। বিপজ্জনক জেনেও রেললাইনের পাশে বসে থাকে তারা।
রংপুর নগরীর আলমনগর, রেলগেট লালবাগ কল্লোনির মানুষের শীত যাপনের এটি একটি পরিচিত চিত্র।
নছিমন বেওয়া (৬০) কয়েক মাস বয়সের নাতিকে কোলে নিয়ে অনেকের সঙ্গে বসেছেন আগুনের পাশে।
তিনি বলেন, “টিনের ঘরখান য্যান বরফকলের ঘর। ঠাণ্ডায় বুকের পাজার চেপে ধরে। ল্যাপও নাই, তোষোকও নাই; ছেঁড়া খ্যাতাত [কাঁথায়] জার [শীত] কি কমে?”
উত্তরের নগর রংপুর হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় তীব্র শীতপ্রবণ এই অঞ্চল। প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে ভাসমান-ছিন্নমূল মানুষের জীবনে শীত বর্ণনাতীত কষ্ট নিয়ে এসেছে।
রংপুর জেলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৬৯ সালের ১লা মে রংপুর শহরের গোড়াপত্তন হয়। সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়েছে ২০১২ সালের ২৮ জুন। নগরীর ৫৭টি বস্তিতে এখন প্রায় লাখো মানুষের বাস।
অসহ্য শীত থেকে বাঁচতে অনেকেই ভিড় করে নগরীর পুরাতন কাপড়ের ভাসমান মার্কেটগুলোতে।
রাতের বেলা রিকশা চালান আতিয়ার রহমান। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইতোৎ ইসকা চালাং, খুবেই জার নাগে। তবোন পড়ি ঠাণ্ডায় পাও জমি যায়, হাত-শিক নাগি যায়। একান টাউজার নিবার আসসোনোং। তা যে দাম কয়ছে। তায় ফিরি যায়ছোল।”
তিনি আরও বলেন, দরকার হলে আরও কম্বল ও টাকা দেওয়ার কথা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ হিসাবে নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৫৫৬ জনের বাস। আর পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ জরিপে এই জেলায় দারিদ্র্যের হার ৪৪ শতাংশ।