নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেরপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Published : 01 Jan 2021, 09:46 PM
শুক্রবার বিকালে শেরপুর শহরের সাওয়াল পীরের মাজার এলাকায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নবীনগর মেলা উদযাপন কমিটি মেলার আয়োজন করে।
করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে শেরপুর শহরসহ এর পাশপাশ এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর উপস্থিত ছিল। এদের অধিকাংশই মাস্ক না পরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মেলায় আসে।
সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, এখানে গ্রামীণ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মুড়কি-মুড়ি, মোয়া, নিমকি, গজা, কলাই, বাদাম কটকটি, তিলের খাজাসহ নানা ধরনের খাবার; প্লাস্টিক ও মাটির তৈরি শিশুদের বিভিন্ন খেলনা; নারীদের বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী এবং গৃহস্থালি পণ্যের পসরা বসেছে মেলায়।
পরে বিজয়ীদের মাঝে মেলা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
মেলাকে ঘিরে শেরপুর শহরের নবীনগরসহ আশপাশের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নবীনগরের এই পৌষ মেলা কত বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে না পারলেও আয়োজক কমিটির সদস্য শেখ মমতাজ উদ্দিন জানান, প্রায় দুইশ বছর ধরে এই পৌষ মেলা এখানে হয়ে আসছে। তাই বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতিবছর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
প্লাস্টিকের খেলানা সামগ্রী নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসা ছাবেদ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনার কারণে কামাই রোজগার আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। অনেকদিন পর এই মেলায় বেচাকেনা ভালো হয়েছে।
ঝুড়ি, নিমকি, গজা, বাতাসা, কালাই, তিলের খাজা প্রভৃতি মুখরোচক দেশি ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকানি জুলহাস বলেন, “এহন তো করোনার কারণে মেলা-টেলা আগের মতো অয় না। পৌষ মেলা উপলক্ষে কিছু মালপত্র বানাইছিলাম। মেলায় দোহান দিয়া বেচাকেনা বালাই অইছে। মানুষজনও মেলায় অনেক অইছিল।”
নয়ানি বাজারের গৃহিনী উম্মে কুলসুম রত্না স্বামী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে পৌষ মেলায় এসেছিলেন।
শিশু রেজওয়ানুল ইসলাম রাফসান করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি থেকে বাবা-মার সঙ্গে পৌষ মেলায় এসে খুবই উচ্ছ্বসিত ছিল। মেলায় ঘোরাঘুরি ও ঘোরদৌড়, গাঙ্গি খেলা দেখে এবং তার পছন্দের কিছু খেলানা জিনিসপত্র কিনে খুবই খুশি।
রঘুনাথ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শুভ্র সাহা রায় বলেন, “আগে এই পৌষ মেলা দেখতে একা একা এসেছি। এবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলায় এসে খুবই ভাল লেগেছে।”
ঝিনাইগাতীর বাসিন্দা মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী ইফতেখার জাহান বৃষ্টি বলেন, ইতিপূর্বে গ্রামীণ মেলায় সেভাবে যাওয়া হয়নি। এবার পৌষ মেলায় প্রথম এসে তার খুবই ভাল লেগেছে। জীবনে প্রথম খুব কাছ থেকে ঘোড়দৌড় দেখে সবচেয়ে ভালো লেগেছে।