নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনকারী সবাই স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর লোক বলে র্যাব জানিয়েছে।
Published : 05 Oct 2020, 05:22 PM
সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম।
দেলোয়ার বাহিনীর লোকজন বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি ও কু-প্রস্তাবে রাজি করানোর চেষ্টা করেছে বলেও র্যাবের ভাষ্য।
এক মাস পর ভিডিওটি ভাইরাল হলে তারা আত্মগোপনের চেষ্টা করে। তবে কে বা কারা ভিডিওটি ছড়িয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে র্যাব জানিয়েছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৩৫ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে একদল যুবক তাকে বিবস্ত্র করে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায় এবং তার ভিডিও ধারণ করে। একমাস পর ৪ অক্টোবর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে নয়জনের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
আসামিরা হলেন- বাদল, মো. রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যা। তাদের সবার বাড়ি বেগমগঞ্জে।
আসামিদের মধ্যে রহিম ও রহমত উল্যাকে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আর র্যাব-১১ এর একটি দল সোমবার ভোরে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে (২০) এবং রোববার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল থেকে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আসামিরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনের চেষ্টা করে। রোরবার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইলে চেকপোস্টে বাসে তল্লাশি চালানোর সময় বেগমগঞ্জের ‘দেলোয়ার বাহিনী প্রধান’ দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে থাকা দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরে ভোরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কামরাঙ্গীরর চর এলাকায় একটি প্লাস্টিক কারখানা থেকে মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ওরফে বাদলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেলোয়ার অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায়ে জড়িত বলে র্যাব কর্মকর্তা সাইফুল জানান।
তিনি বলেন, “দেলোয়ার বাহিনী ওই এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায় ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। দেলোয়ার এলাকায় অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রন্ত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুইটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুল বলেন, ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। তবে ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পেছনে কাদের হাত রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্লীলতাহানি ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা এই কাজ করেছে। তবে পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে ৮/১০ জন জড়িত রয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনের নাম না থাকলেও তিনি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। আসামিরা সকলেই দেলোয়ার হোসেনের লোক। তারা একত্রে চলাফেলা করে; নানা অপর্কম করে।