নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
Published : 08 Oct 2018, 10:22 PM
দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় সোমবার কিশোরগঞ্জে দেওয়া গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যে দলকে ভোট দিলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন হবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এমন দলকে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দিতে হবে।
সেই সঙ্গে মনোনয়নের সময় সৎ মানুষকে বেছে নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েই অনেকে জনগণকে আর মানুষ মনে করে না; জনগণের উপর মাতুব্বরী ফলায়; মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে।
তাই যে নেতা সৎ এবং মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবে, এমন মানুষকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
“যারা দুর্নীতি করে, ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা খেয়ে কাজ খারাপ করে, ঘুষ খায়, টিআর-কাবিখা বিক্রি করে খায়, মানুষকে মানুষ মনে করে না এমন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ নয়।”
কিশোরগঞ্জের মাটিতে নিজের রাজনীতির বিশ্ববিদ্যালয় ও তীর্থস্থান উল্লেখ করে হামিদ এ জেলার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা ও ঋণ স্বীকার করেন।
তার দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া কিশোরগঞ্জবাসীর অবদান বলে উল্লেখ করেন এবং জেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
কিশোরগঞ্জে মানুষের সহায়তা ছাড়া তার আজকের জায়গায় আসা সম্ভব ছিল না বলে মনে করেন তিনি; এবং যতদিন বেঁচে থাকবেন কৃতজ্ঞ চিত্তে তাদের সেবা করে যাওয়ার প্রতিশ্রুত দেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি পৃথিবীর যেখানেই গেছি কিশোরগঞ্জকে ভুলি নাই। কিশোরগঞ্জের স্থানীয় ভাষায় কথা বলেছি। কিশোরগঞ্জকে পরিচিত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছি।”
এছাড়া ভৈরবে রেলের বাইপাস নির্মাণ, নতুন ট্রেন চালু ও অন্যান্য ট্রেনে কোচের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি হামিদ তার বক্তৃতার এক পর্যায়ে অসুস্থ জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রোগমুক্তি কামনা করেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় কিশোরগঞ্জে জেলা গণসংবর্ধনা কমিটির উদ্যোগে সরকারি গুরুদয়াল কলেজ মাঠে বিকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা গণসংবর্ধনা কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, সোহরাব উদ্দিন, আফজাল হোসেন ও দিলারা বেগম আছমা।
পিপি শাহ আজিজুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, জাসদ, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জেএসডি নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
তিন দিনের সফরের শুরুতে সোমবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারে জেলা শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্টেডিয়ামে অবতরন করেন। রাতে সার্কিট হাউসে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সূচি রয়েছে।
সূচিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জেলা আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা সভায় যোগদান এবং জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত কয়েকজন নেতৃবৃন্দের বাসায় যাওয়ার কথা রয়েছে। বুধবার তিনি ঢাকায় ফিরবেন।