ভোলার লালমোহন ও মনপুরা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে শতশত ঘরবাড়ি, স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ নানা স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়েছে।
Published : 17 Apr 2018, 11:45 PM
তেঁতুলিয়া নদীতে ঝড়ের কবলে পড়া নৌকা ডুবে এক মাঝি নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড় বয়ে যায়।
যুগান্তরের লালমোহন উপজেলা প্রতিনিধি জসিম জনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে লালমোহন উপজেলা সদরের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়।
এতে পৌর এলাকায় লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মায়ানগর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, আব্দুল ওহাব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্ব মহেশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব রমাগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনের ঘর ভেঙ্গে পড়ে ও আধপাকা ঘরের টিনের চালা উড়ে যায় বলে জানান জনি।
লালমোহনের চ্যানেল ৯ এর প্রতিনিধি মাসুদ রহমান জানান, ঝড়ে কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের, মায়ানগর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র, লালমোহন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী, চরভূতা ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক ব্যক্তি ও নয়ানী গ্রামের এক ব্যক্তি আহত হন।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের জন্য এমপি মহোদয়ের সুপারিশে তালিকা করে প্রত্যেকের জন্য দুই বান্ডিল ডেউ টিন, ২০ কেজি করে চাল ও নগদ ছয় হাজার টাকা বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত পূর্ণ বিধ্বস্ত ঘরের সংখ্যা ১৫০ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সংখ্যা ২৫০ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, স্বরুপকাঠি থেকে পাটকাঠি নিয়ে আসা একটি নৌকা ফরাজগঞ্জের কাছে তেঁতুলিয়া নদীতে ডুবে যায়; মাঝি আব্দুস শুকুর নিহত হন। শুকুরের বাড়ি যশোর জেলায়।
মনপুরায় কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড
ভোলার মনপুরা উপজেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বহু বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে ঝড় শেষে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া অনেক জনপ্রতিনিধি তাদের এলাকার ক্ষয়ক্ষতির খবর দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসাটির টিনের চাল পুরোটা উড়ে গেছে। উত্তর সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকার জয়দাসের সেলুনটি ঝড়ে উড়ে গাছে ঝুলে রয়েছে।
১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুর রহিম বলেন, “ঝড়ে আমার এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।”
ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হাসেম সিরাজ কাজী বলেন, “হঠাৎ ঝড়ে বহু মানুষের বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নিচ্ছি।”
হাজির হাট ইউনিয়নের দাসেরহাট গিয়ে দেখা গেছে, কৃঞ্চ দাস, সাধন বালা দাস, শাহিনূর বেগম ও অলিউল্লার বসতঘরগুলোর চাল উড়ে গেছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবু মিয়ার বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উত্তর চরযতীন জামে মসজিদের টিনের চাল আংশিক উড়ে গেছে। এখানে বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ে বিদ্যুৎলাইনের ক্ষতি হয়েছে।
হাজির হাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক বলেন, “আমার ইউনিয়নে ঝড়ে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া নিচ্ছি।”
প্রশাসন এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করতে পারেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল আজিজ ভূঁঞা বলেন, “ঝড়ে উপজেলায় মাদ্রাসাসহ বসতবাড়ির ক্ষতির খবর পেয়েছি। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করব।”