দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট (মিঠাপানির জলাবন) রাতারগুলে পর্যটকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে বনবিভাগ।
Published : 05 Sep 2017, 05:16 PM
পর্যটকদের জন্য অনলাইনে টিকেটিং ও প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে এমন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, যা বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুনিরুল ইসলাম।
এছাড়া সপ্তাহে দুইদিন বনে প্রবেশ বন্ধ রাখার কথাও বনবিভাগ ভাবছে বলে জানান তিনি।
মুনিরুল ইসলাম বলেন, “পর্যটকদের অবাধ যাতায়াতের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে রাতারগুলের জীব বৈচিত্র্য। বন ছেড়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণিরা। এ অবস্থায় প্রাণীদের বসবাস নিরাপদ করতে বনের উপর মানুষের চাপ কমানো জরুরী। এ জন্য বনে মানুষের ধারণ ক্ষমতা নির্ণয়ের কাজ চলছে।”
বনের আকার আয়তনের উপর ভিত্তি করে প্রতিদিন কতজন পটর্যটককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে তা বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ঠিক করবে বলে জানান তিনি।
তবে কবে নাগাদ এ পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে তা জানাননি বন কর্মকর্তা মনিরুল।
রাতালগুল পর্যটকের চাপ নিতে পারছে না জানিয়ে বন কর্মকর্তা মুনিরুল বলেন, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল,বাগবাড়ি ও পূর্ব মহেশখেড় এলাকার ৫০৪ দশমিক ৫০ একর আয়তনের বন রাতারগুল। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এ বনে হিজল করচসহ ৭৩ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২৫ প্রজাতির স্তন্যপায় প্রাণী, ২০ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৭৫ প্রজাতির পাখি ও নয় প্রজাতির উভচর প্রাণীর রয়েছে।
“কিন্তু পর্যটকের অবাধ যাতায়াতের কারণে দিন দিন বনের প্রাণী রক্ষার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাই পর্যটকের চাপ কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে।”
দীর্ঘ দিন ধরে রাতারগুলের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় পর্যটক নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সিলেটের পরিবেশবাদীরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, মানুষের অবাধ যাতায়াতের কারণে ধ্বংসের মুখে পড়েছিল দেশের একমাত্র মিঠাপানির বনটি।
“বন রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে ও এ বনকে পর্যটন কেন্দ্র না করতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। শেষ পর্যন্ত বনবিভাগ উদ্যোগ নিয়েছে শুনে ভাল লাগছে।”
সেভ দ্যা হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সিলেটের প্রধান নির্বাহী আব্দুল হাই আল হাদী বলেন,‘রাতারগুলের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বনবিভাগের এ উদ্যোগ প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ বনের অস্তিত্ব রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।