ধানের ‘আশানুরূপ’ দাম না পাওয়ায় বাম্পার ফলনেও হাসি নেই রংপুরের কৃষকের মুখে। লাভ বেশি বলে অনেকেই আলু ও ভুট্টা আবাদের কথা ভাবতে শুরু করেছেন।
Published : 29 Apr 2016, 11:25 AM
রংপুরে হাট-বাজারগুলোতে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকায়। আর আলু কেনাবেচা হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা মণ দরে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর রংপুর জেলায় এক লাখ ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এবার ছয় লাখ ২২ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করেছে কর্তৃপক্ষ।
মণ প্রতি ধানের ৮৫০ টাকা নির্ধারণ এবং প্রতি ইউনিয়নে ক্রয়কেন্দ্র চালুর দাবিতে বুধবার দুপুরে নগরীর সিও বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শত শত কৃষক। একই দাবিতে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
কয়েকবছর ধরে ধানের ‘আশানুরূপ’ দাম না পাওয়ায় এবার তিনি তার ছয় একর জমির মধ্যে চার একরে ভুট্টা আবাদ করেছেন- বলে জানালেন।
পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ ইউনিয়নের শারিফা গ্রামের কৃষক ফয়জার রহমান ছয় একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন।
তিনি বলেন, জমি চাষ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত তার প্রতি একরে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। আর ৪০০ টাকা মণ দরে ১০০ মণ ধান বিক্রি করে পেয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। ৪০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে বলে তার ভাষ্য।
মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিমের বলেন, “তিন একর জমিত বোরো আবাদ করি ধান পাচি ৩১০ মণ। ৪০০ থাকি ৪৫০ টাকা মণ দরে ধান বেচাইলে অর্ধেক লোকসান হইবে। বেশি দামের আশায় ধান শুকি গোলাত তুলি থুচি।”
রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজুল্লাহ গ্রামের কৃষক মোজাফফর হোসেন বলেন, “বোরো ধান ৪০০-৪৫০ টাকা মণ দরে কেনাবেচা হইতোচে। আর এক মণ আলু বিক্রি হইতোচে ৬০০-৬৫০ টাকায়। ধানের দাম কম হওয়ায় আলু বেচে সংসরের প্রয়োজন মিটাতুচি।”
“চালের আমদানি বেশি হওয়ার ক্রেতাও কম তাই ধানের দাম কমছে।”
তবে সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা শুরু হলে দাম বেড়ে যাবে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এবার সরকার ২৩ টাকা কেজি দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার সিধান্ত নিয়েছেন। ৫ মে থেকে সরকারি পর্যায়ে ধান কেনা শুরু হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।