যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত ২০ বছরের তরুণ রেজওয়ানকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই লাইফ সাপোর্টে আছেন।
Published : 15 Sep 2017, 08:44 PM
গত রোববার সন্ধ্যায় গাড়িতে করে স্টোর ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া (৩৫) ও রেজওয়ান (২০) বাড়ি ফেরার সময় স্টোরের সামনে দুর্বৃত্তের আকস্মিক গুলিতে প্রাণ হারান সাইফুল এবং গুলিবিদ্ধরেজোয়ানকে মুমূর্ষু অবস্থায় গ্রেডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতালে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ভর্তির পর থেকেই রেজওয়ানকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিলো। তবে গুলি মাথার মগজের কাছ দিয়ে ভেদ করায় শুরু থেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছেন নিউরো চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, রেজওয়ানের ‘ব্রেইন ডেড’।
পুলিশের ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষার সময় দেখা যায়, গাড়ি থেকে দুইজন দুর্বৃত্ত লাফিয়ে নেমে সাইফুলের গাড়ির সামনে গিয়ে খুব কাছ থেকে অতর্কিতে গাড়ির কাঁচ ভেদ করে গুলি ছুঁড়ে এবংগাড়িটি মুহূর্তেই স্থান ত্যাগ করার দুই মিনিটের মাথায় আবারও ফিরে এসে পুনরায় গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করতে পুলিশ জোর তৎপরতা চালিয়েছে। তবে এভাবে অতর্কিত গুলি করে হত্যার বিষয়টি এখনও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রে রেজওয়ানের কোনও নিকট আত্মীয় না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে অবস্থানরত রেজওয়ানের বাবা মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ’র সাথে টেলিফোনে কথা বলে এখানকার কাউকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বলে রেজওয়ানের গ্রামের প্রতিবেশি জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
এদিকে রেজওয়ানের বাবা-মা যাতে এসময়েই যুক্তরাষ্ট্র আসতে পারে, সেজন্যে তাদের কাছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি স্পনসর পত্রও পাঠিয়েছে।
দুয়েকদিনের মধ্যে রেজওয়ানের বাবা শরিফুল্লাহ ও তার মা ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রদূতাবাসে ভিসা পেতে সাক্ষাৎকার দেবেন বলে নিহত সাইফুল ভুঁইয়ার ভাই ও ব্যবসায়িক অংশীদার বিপুল ভূঁইয়া জানিয়েছেন।
মরদেহের সৎকার, দাফন কিংবা স্বদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন বলে কমিউনিটিতে ইতোমধ্যেতহবিল সংগ্রহ শুরু করেছেন সংগঠকরা।
রেজওয়ান তিন মাস আগে বাংলাদেশ থেকে আটলান্টায় আসে। তবে ইমিগ্রেশন ভিসার বৈধ কাগজ না থাকায়ব্রাজিল, মেক্সিকো হয়ে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ছয় মাসের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে হয়েছে তাকে।
বাবা সৌদিআরবে কষ্টের কাজ করতেন। তাই রেজওয়ান আটলান্টায় সাইফুলের স্টোরের কাজটি পাবার পরই বাবাকে সৌদির চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন এবং রেজওয়ান নিয়মিত দেশে টাকা পাঠাবেন বলে বাবাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
রেজওয়ানের বাড়ি বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরী অঞ্চলের আমিরাবাদ গ্রামে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |