প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Published : 30 Sep 2014, 04:58 PM
মঙ্গলবার দুপুরে সাভারে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সরকারের বড় দায়িত্বে থেকে সরকারেরই ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর বক্তব্য দেওয়া বা আচরণ করা কারো জন্য সমীচীন নয়।”
গত রোববার নিউ ইয়র্কে স্থানীয় টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকীর ওই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ওই ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, “এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই। কোনো প্রডাকশন নাই, শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে।”
এই বক্তব্যের জন্য লতিফ সিদ্দিকীকে বরখাস্তের দাবি উঠেছে, তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও করেছে বিভিন্ন ইসলামী দল।
লতিফ সিদ্দিকীর মন্তব্যের সমালোচনা দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাদের বলেন, “বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর গোচরে আছে, তিনি দেশে ফিরলে এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘ভবিষৎ নেতা’ হিসেবে অভিহিত করে কাদের বলেন, জয়কে নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তাও ঠিক নয়।
নিউ ইয়র্কের অনুষ্ঠানে এক সাংবাদিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকা নিয়ে মন্ত্রীর মন্তব্য চাইলে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। 'জয় ভাই' কে?
“জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও কেউ নন।”
সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের সিটি সেন্টারের সামনে দ্বিতীয় ফুট ওভার ব্রীজ উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী ফিতা কেটে ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন শেষে উপরে ওঠার সময় নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাকিতে উঠতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
এ সময় ওভারব্রিজে টাঙানো বড় বড় ব্যানারে স্থানীয় সাংসদ ও নিজের ছবির দিকে চোখ যায় মন্ত্রীর। তাকে স্বাগত জানিয়েই ছিন্নমূল হকার্স লীগ ব্রিজের দুই পাশে বিশাল আকৃতির এসব ব্যানার টাঙায়।
ক্ষুব্ধ স্বরে কাদের বলেন, “কার নির্দেশে এসব ব্যানারে আমার ছবি দেওয়া হয়েছে। যারা আমার ছবি ব্যবহার করেছেন, তারা ঠিক করেননি। নেতারা নিজেদের ছবি দিয়ে যাই করুক, আমার ছবি জুড়ে দিতে পারেন না।”
তাৎক্ষণিভাবে এসব ব্যানার খুলে ফেলার নির্দেশ দেন মন্ত্রী, পরে ব্যানার খুলে ফেলা হয়।
স্থানীয় সাংসদ এনামুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান মোল্যা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।