কমিটি ভেঙে দেওয়ায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিএনপি কার্যালয় অবরুদ্ধ করাকে ‘পোলাপানের মান-অভিমান’ বললেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
Published : 11 Jun 2019, 07:42 PM
তিনি বলছেন, সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিষয়টিকে ‘বড়’ করে দেখানো হচ্ছে। এটা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
গত ৬ জুন ঈদের আগের দিন ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার জন্য বয়সসীমা বেঁধে দেওয়াসহ তিনটি যোগ্যতা নির্ধারণী শর্ত ঠিক করে দেওয়া হয়।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে তালা লাগিয়ে সামনে অবস্থান নেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। কমিটি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা প্রত্যহারের পাশাপাশি ছাত্রদলের দেওয়া তিনটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে নতুন কমিটি করার দাবি জানান তারা।
বিকালে ওই কার্যালয়ে ঢুকে কমিটি ভাঙার সিদ্ধান্তের সমর্থক ছাত্রদলের এক নেতাকে বেধড়ক মারপিট করার পাশাপাশি বিএনপি অফিসের কর্মীদের বের করে দেন বিক্ষুব্ধরা। এরপর ঘণ্টাখানেক পর ওই কার্যালয়ে যান মির্জা আব্বাস।
তারা ভবনের তৃতীয় তলায় স্যালাইন লাগিয়ে থাকা রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে যান এবং চিকিৎসকের কাছে তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। রিজভী সোমবার সকালে অনবরত বমি করতে থাকেন। পরে দলের চিকিৎসকরা তাকে স্যালাইন দিয়ে সেখানেই চিকিৎসা শুরু করেন।
তিনি দলের নীতিনির্ধারকদের একজন এবং বিক্ষুব্ধরা দাবি জানাচ্ছে- প্রশ্ন করা হলে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিষয়টা সাংবাদিকরা যেভাবে সিরিয়াসলি নিয়েছে বা উপস্থাপন করেছে আসলে বিষয়টি সে রকম সিরিয়াস না। এটা পোলাপানের কাজ-কর্ম, মান-অভিমানের কাজ।
“কয়েকদিন আগে ঈদ গেছে। মান-অভিমান হয়েছে। এটা ঠিক হয়ে যাবে। কারও কিছু করতে হবে না। কোনো সালিশ, আলোচনা কিছুই করতে হবে না। ওরা রাগ করেছে, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
১৫ মিনিট পর বেরিয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটা কোনো পরিস্থিতি না যদি আপনারা ফলাও করে প্রচার না করেন। কেউ ব্যথা পেলে চিৎকার দেয়-এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দীর্ঘদিন দলের কতগুলো পদ্ধতিগত কারণে অথবা নিয়মিত কাউন্সিল না হওয়ার কারণে যোগ্য ছেলেরা তাদের আরাধ্য লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে নাই। সেই বিষয়টা আমাদের বিবেচনা করতে হবে, এরা দলের জন্য পরিশ্রম করে, এরা বাইরের নয়, এরা দলের মঙ্গল চায়।
“দলের মঙ্গল এবং ওদেরও যতটুকু প্রাপ্যটা আছে তা সমাধান করার পথ আমাদের খুঁজতে হবে। এটা অনেক বড় দল, অনেক কর্মী, অনেক নেতা। আমরা বিরোধী দলে আছি, আমাদের সীমাবদ্ধতাও আছে।
“এই সীমাবদ্ধতার মূল কারণটা হল, আমাদের নিয়মিত কাউন্সিল হয় নাই। মামলা-হামলা-নির্যাতনের কারণে নিয়মিত এই সাংগঠনিক কাজগুলো হয়নি। এই নিয়মিত সাংগঠনিক কাজগুলো হলে ওরাও ছাত্রদল করার জন্য এত আগ্রহী হতে না। ওরাও বুঝে এটা।”
সমাধান কী দেখছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সমস্যা যেমন আছে, সমাধানও আছে। আলোচনার মাধ্যমে এটার সমাধান হবে।”
রুহুল কবির রিজভী কেমন আছেন জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, “তিনি অসুস্থ। তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। ডাক্তার সেখানে আছে।”
তিনি হাসপাতালে যাবেন কি না জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, “এটা চিকিৎসকরা ঠিক করবেন। কিন্তু কোনো পরিস্থিতি বা এই ঘটনার জন্য তাকে বাইরে যেতে হবে- এটা যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন না।”
মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর এসব কথা বলে যাওয়ার পরও বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিএনপি অফিসের সামনেই অবস্থান নিয়ে ছিল। কার্যালয়ের প্রধান ফটকেও তালা লাগানো ছিল।