ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে ‘অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছাদের’ স্থান দেওয়া হলে ফল ভাল বয়ে আনবে না মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 07 May 2017, 09:35 PM
সরকার সমর্থক এই ছাত্র সংগঠনটির মধ্যে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার তাগিদও দিয়েছেন সংগঠনটির সাবেক এই সভাপতি।
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এ নেতা দলের কর্মী-সমর্থক-নেতাদের আচরণে প্রায়ই বিরক্তি প্রকাশ করে তাদের ‘কাউয়া’, ‘হাইব্রিড’ বা ‘মুরগি’ অভিধা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন।
পরে গত ১৯ এপ্রিল ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এসব শব্দ আর না লিখতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন ওবায়দুল কাদের।
রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে যদি দল ভারি করার জন্য ‘প্যারাসাইট, অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছাদের’ স্থান দেওয়া হয়, তবে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে না।
“সেরকম কিছু ঘটে বলেই, মাঝে মাঝে কিছু ঘটে যা পূর্বসূরি হিসেবে আমাদের লজ্জা দেয়। আমাদের সরকারকে লজ্জা দেয়, পার্টিকে লজ্জা দেয়, সরকারের এত অর্জন তা ম্লান করে দেয়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলোতে ‘পলিটিক্যাল রুম’ থাকার সমালোচনা করেন কাদের।
“আমি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মন জয় করব, তাদের কথা বলব।কিন্তু হলে পলিটিক্যাল রুম আছে। হলে পলিটিক্স করতে হলে ওর (সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী) রুমে আসতে হবে।হলে কেন পলিটিক্যাল রুম থাকবে।তুমি তোমার যোগ্যতার ভিত্তিতে সিট পাবে, সেখানে তো পলিটিক্যাল রুম থাকতে পারে না।”
‘পলিটিক্যাল রুম থাকলে সংগঠনের মিছিল অনেক বড় হয়’ বলে এক ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেছেন জানিয়ে কাদের বলেন, মিছিলে যত লোক হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি লোক বিরক্ত হচ্ছে।এমন কোনো কাজ কী করা উচিত?”
ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে পদ ভাগাভাগিরও সমালোচনা করেন তিনি।
“এখন কমিটি দিতে হলে একজনের পকেটে একটা, আরেকজনের পকেটে একটা। তাহলে কেমনে ছাত্রলীগটা হবে? এখানে যোগ্যতার স্বীকৃতি হবে না, হতে পারে না। এই ট্র্যাডিশন থেকে, এই অনিয়মের নিয়ম ভাঙ্গতে হবে।”
“কেন এই গ্রুপ হবে, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর, ছাত্রলীগ শেখ হাসিনার।ছাত্রলীগ ওবায়দুল কাদেরের নয়। পদের জন্য গ্রুপ মেইনটেন করে তাদের পদ থাকে না। এ পদের যোগ্যতা নেই।”
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ আর দুই মাস বাকি থাকায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ‘খুব দূরে নয়’ বলে জানান সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী।
২০১৫ সালের ২৫-২৬ জুলাই ২৮ তম সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন।
জেলখানায় বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা দিনলিপি নিয়ে প্রকাশিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতরণের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি।
সভাপতি সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।