যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলী ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ খারিজ করে দেওয়ার পর হরতাল ডেকেছে তার দল একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী।
Published : 30 Aug 2016, 12:02 PM
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের রায়ের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের নামে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের বার্তা দেওয়া হয়, যা জামায়াতের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকার পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যা করছে। সরকারের সেই ষড়যন্ত্রের শিকার জনাব মীর কাসেম আলী।”
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে কাসেমের জড়িত থাকার বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হলেও একে সরকারের ‘মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগ’ বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অর্থাৎ মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তিনি জামায়াতের পঞ্চম শীর্ষ নেতা, শেষ বিচারেও যুদ্ধাপরাধের দায়ে যার মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাসেমকে সর্বোচ্চ সাজার এই আদেশ দেয়। গত ৮ মার্চ আপিলের রায়েও তা বহাল থাকে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার অপরাধে তার এই সাজার রায় আসে।
কাসেম ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মঙ্গলবার ‘ডিসমিসড’ বলে সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ট্রাইব্যুনালের বিচার থেকে শুরু করে রিভিউ পর্যন্ত এ মামলার বিভিন্ন স্তরে সরকারের পক্ষ থেকে দফায় দফায় ‘বিচারকে প্রভাবিত করার জন্য অবাঞ্ছিত ভূমিকা’ পালন করা হয়েছে।
“মীর কাসেম আলীকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং তিনিসহ জামায়াতের আটক সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে আমি ৩১ অগাস্ট বুধবার সারাদেশে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
এর আগে ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধ মামলার সব রায়ের পরও হরতাল করে জামায়াত।
প্রথম দিকে এসব কর্মসূচিতে সারা দেশে সারা দেশে ব্যাপক নাশকতা চালানো হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হরতালের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যায়নি, জনজীবনেও তেমন প্রভাব পড়েনি।