বহিষ্কৃত সহসভাপতি সোনালি আক্তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একপাক্ষিক বিচার হয়েছে।”
Published : 26 Sep 2022, 01:43 PM
ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় ১৬ নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার ‘সুষ্ঠু তদন্তের’ দাবি জানিয়েছেন বহিষ্কৃতরা।
তা না হলে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন তারা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে ইডেন কলেজের ফটকের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বহিষ্কৃত নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈ। কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ছিলেন তিনি।
সুস্মিতা বলেন, “কীভাবে তদন্ত ছাড়া এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হল? এ ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার এবং এর সুষ্ঠু বিচার না করা হয়, তাহলে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
বহিষ্কৃত আরেক সহসভাপতি সোনালি আক্তার বলেন, “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একপাক্ষিক বিচার হয়েছে। এই একপাক্ষিক বিচারের প্রতিবাদে আমরা ধানমণ্ডিতে পার্টি অফিসে গিয়ে আমরণ অনশন করব।”
চলতি বছর ১৩ মে তামান্না জেসমিন রীভাকে সভাপতি ও রাজিয়া সুলতানাকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে ৪৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ইডেনে ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত, ১০ সহ-সভাপতিসহ বহিষ্কৃত ১৬
ইডেনে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি, আহত ১০
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
ছাত্রলীগ নেত্রীকে ‘মারধর’, মধ্যরাতে উত্তপ্ত ইডেন কলেজ
এর মধ্যে ৩০ জনকে সহ-সভাপতি, ৫ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৭ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রীভা ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস।
এরপর শনিবার রাতে জান্নাতকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।
রোববার দুপুরে জান্নাতের সমর্থকরা ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈসহ ২০-২৫ জন পদধারী নেত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর পাল্টায় বিকালে সভাপতি রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে জান্নাতের সমর্থকরা বাধা দেয়। তখন মারামারি বেঁধে গেলে দশজন আহত হন।
দিনভর উত্তেজনা আর মারামারির পর রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করার ঘোষণা আসে। সেইসঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১৬ জনকে বহিষ্কার করার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ওই ষোলজনের মধ্যে ১০ জনই সহ-সভাপতি, যারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধিতা করছিলেন।
বহিষ্কৃতরা হলেন: ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ে, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিত্তি ও সাংগাঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তার।
কীসের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে- এ প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা একটা তদন্ত কমিটি করেছিলাম, তারা তাতে আস্থা রাখতে পারছে না।
“তাই আমরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ একটি বডি মিলে এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করেছি। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এ ঘটনায় আরও তদন্ত চলবে বলে সে সময় জানান লেখক ভট্টাচার্য।