যতই দিন যাচ্ছে বিশ্বের মানচিত্রে, আলোকচিত্রের বাজারে সুনাম কুড়াচ্ছে বাংলাদেশ। তবে খুব সহসাই ঘটেনি ব্যাপারটা। সেই ইংরেজ শাসন আমল থেকেই আলোকচিত্রীদের বৈশ্বিক খাতায় নাম উঠিয়েছে এদেশের মানুষ। তবে গেলো এক দশকে অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে এদেশের আলোকচিত্রীরা। এক্ষেত্রে পেশাদার আলোকচিত্রীদের পাশাপাশি ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছেন শৌখিন আলোকচিত্রীরাও।
Published : 01 Sep 2014, 06:35 PM
আলোকচিত্র চর্চায় বড় ভূমিকা রেখে চলেছে বিভিন্ন শৌখিন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ক্লাবগুলো। এমনি এক দৃষ্টান্ত 'ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ফটোগ্রাফি ক্লাব – আইইউটিপিসি'।
রোববার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় শেষ হল তাদেরই আয়োজিত 'ব্রেক দ্য সার্কেল– ফোর্থ স্টেপ' নামের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। তবে কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এটি তাদের ৪র্থ প্রদর্শনী।
চিত্রশালা প্লাজার তিন নম্বর গ্যালারিতে প্রবেশের পরেই মনে হল কোনও ছাত্রাবাসে প্রবেশ করলাম বুঝি। দেয়ালে সাঁটা আকর্ষণীয় সব আলোকচিত্র। আর মেঝেতে পড়ে আছে চেয়ার-টেবিল, সাইকেল, প্যান্ট-শার্ট থেকে শুরু করে আরও নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র।
আসলে পড়ে আছে না বলে, বলা উচিত সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পুরো গ্যালারি এমনভাবে কিউরেট করা হয়েছে, যেন তা গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি – আইইউটি’র ছাত্রাবাসের একটা ধারণা দিতে পারে।
তবে শুধু 'সিঙ্গেল ইমেজ'ই নয়, প্রদর্শনীতে 'ফটো স্টোরি' ছিল ৫টি।
৮০ জন অংশগ্রহনকারীর মধ্যে দেশের বাইরে থেকেও ছবি পাঠিয়েছেন কয়েকজন। বিষয়বস্তুর দিক থেকেও ভিন্নতা ছিল সেখানে। প্রদর্শিত আলোকচিত্রের মাঝে ল্যান্ডস্কেপ, পোর্ট্রেইট, স্টিল লাইফ, অ্যাকশান যেমন খুজে পাওয়া যায় তেমনি 'ব্রেকিং স্টরি' বিষয়ের উপর সাজানো হয়েছিলো ডকুমেন্টারির গল্পগুলো। তবে শুধু প্রদর্শনের জন্যই নয়, পুরষ্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্রীরা আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছেন।
সফলভাবে এবারের আয়োজন শেষ করবার পর, আইইউটিপিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রচলিত প্রথা ভেঙে ছবি তুলবার এবং তা মানুষের সামনে তুলে ধরবার এই আয়োজন ভবিষ্যতেও চালু থাকবে।
একদিকে যখন ভাঙনের সুর, ঠিক তখনি চিত্রশালা প্লাজার আরও দুই গ্যালারিতে চলছে 'নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি ক্লাব – এনএসইউপিসি'র আয়োজনে 'ইন্টারন্যাশনাল ইন্টার ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি এক্সিবিশন – ২০১৪'।
আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ১৫০টি ছবি। ৮টি বিভাগে বাছাই করা এইসব ছবি ছাড়াও রয়েছে ১০টি 'ফটো স্টোরি'। অংশ নেওয়া মোট আলোকচিত্রীর সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। ১০১ জনের সম্মিলিত এই আয়োজনে ছবির বিষয়বস্তুতে বৈচিত্র্য একটু বেশি।
বিদেশের বিভিন্ন আর্ট স্কুল থেকে নিজেদের কাজ পাঠিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। লক্ষণীয় বিষয় হল 'আলোকচিত্রের ভাষায় এইরকম বৈচিত্র্যতা সহসাই কোনও প্রদর্শনীতে দেখতে পাওয়া যায় না।
সুতরাং দেরি করে লাভ নেই। নিজের আগ্রহের জায়গাটুকু ধরে রাখতে কিংবা শুধুই শিল্পের রস নিতে যে কারোরই ঘুরে আসা উচিৎ এই প্রদর্শনীতে।
ছবিঃ ফায়হাম ইবনে শরীফ