শুধু শারীরিক নয়, স্থূলতাকে সামাজিক সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত করে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে ঢাকা শহরে এই ক্রমবর্ধমান সমস্যা রোধে ২০২০ সালের মধ্যে দুই লাখ কেজি ওজন কমানোর লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে একটি স্বাস্থ্য পরামর্শক সংস্থা।
Published : 17 Nov 2018, 10:31 PM
শনিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘ওবেসিটি বিষয়ক’ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার।
বিশেষ এই উদ্যোগ নিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে স্থূলতা একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। ছোট থেকে বড় সবাই এখন এই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের প্রায় ৬৫ কোটি মানুষ বিভিন্ন মাত্রার স্থূলতায় ভুগছেন। ঢাকা শহরেও এ সংখ্যা কম নয়। আর সে কারণেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, “মানুষের শরীরকে সৌন্দর্যের মধ্যে আনার চেষ্টা হলো পুষ্টিবিদ্যা। পুষ্টির বিষয়টি প্রত্যেক মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো জীবনের ভারসাম্য। ভারসাম্যের কারণেই জীবন ও পৃথিবী সুন্দর।”
জীবনকে সুন্দর করতে শারীরিক ভারসাম্যে গুরুত্ব দিতে বলেন তিনি।
স্থূলতাকে একটি ‘সামাজিক সমস্যা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যদি এখনি বাধা না দেই তাহলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।”
স্থূলতা কমাতে সচেতনতাকেই ‘সবচেয়ে বড় অস্ত্র’ হিসেবে দেখছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
তিনি বলেন, “এই সমস্যা কমাতে চিকিৎসার চেয়ে মানুষকে জাগিয়ে তোলা সবচেয়ে বেশি দরকার।”
ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের উপদেষ্টা আবিদ এ আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার।
শরীর চর্চার সুযোগ কমে আসার কারণেই স্থূলতা বাড়ছে উল্লেখ করে সৈয়দা শারমিন আক্তার বলেন, “নগর জীবনে খোলা জায়গা তেমন নেই। ফিজিক্যাল মুভমেন্ট করার তেমন সুযোগ নেই। এই অবস্থায় মানুষের মাঝে দিনকে দিন স্থূলতা বেড়ে যাচ্ছে।”
স্থূলতার কারণে মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
পুষ্টিবিদ শারমিন বলেন, “স্থূলতার কারণে অনেককে সামাজিকভাবে হেয় হতে হচ্ছে। মানুষের মাঝে হতাশা বেড়ে যাচ্ছে। কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। স্থূলতা একটি সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
কায়িক পরিশ্রমে জোর দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই ওজন কমানো যাবে না। কারণ শরীরের যে পরিমাণ ক্যালরি জমা রয়েছে তা আগে কমাতে হবে। ফলে প্রয়োজন শারীরিক পরিশ্রম।
“আর এই লক্ষ্যে ২০২০ সালের মধ্যে দেশব্যাপী দুই লাখ কেজি ওজন কমানোর উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এই উদ্যোগ সফল করতে দেশের সকল পুষ্টিবিদ কাজ করবে।”
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্থূলতা সমস্যার উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। পরে ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের উদ্যোগে প্রশিক্ষিতদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়।
সংগঠনটির ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘২০২০ সালের মধ্যে ২ লাখ কেজি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এই আয়োজনে বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. এস কে রায় এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহীন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও খবর