সম্প্রতি নেপালে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের বিমানের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছেন নির্মাতা রাজীবুল হোসেন। গত ২৩ এপ্রিল রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নির্মাতা।
Published : 24 Apr 2018, 08:16 PM
“প্রথাগত সিস্টেম চলচ্চিত্রকে আটকে রাখতে পারে, নির্মাতাকে নয়”- এমন বক্তব্যে নিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিলেন নির্মাতা রাজীবুল হোসেন।
প্রথম চলচ্চিত্র ‘হৃদয়ের রংধনু’ সেন্সরবোর্ডে আটকে আছে প্রায় দু’বছর। সম্প্রতি উচ্চ আদালত আগামী ৩০ দিনের মধ্যে চলচ্চিত্রটিকে সেন্সর সার্টিফিকেট প্রদানের পাশাপাশি সার্টিফিকেট প্রদান না করাটি কেনো অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নির্মাতা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চলচ্চিত্র সমালোচক ফাহমিদুল হক, ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিস অফ বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসেন মামুন, নির্মাতা নোমান রবিন ও রিয়াজুল রিজু এবং চলচ্চিত্রটির অভিনেতা শামস কাদির।
সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা রাজীবুল হোসেন বলেন, “আমরা এখন অপেক্ষায় আছি সেন্সরবোর্ড কী উদ্যোগ নেয় তা দেখার। তবে, আমাদের নির্মাণ থেমে থাকবে না।
আমরা দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘রানওয়ে টু জিরো জিরো টু’ নির্মাণ করতে যাচ্ছি। সম্প্রতি নেপালে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার মানবিক দিকটি নিয়ে আমাদের চিত্রনাট্য প্রস্তুতির কাজ চলছে। চলতি বছরেই এ চলচ্চিত্রটির চিত্রধারণের কাজ শুরু হবে।”
চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখছেন হাবিব জাকারিয়া।
এদিকে, সেন্সরবোর্ডে আটকে থাকা ‘হৃদয়ের রংধনু’ চলচ্চিত্রটি প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রায় দুই বছর ধরে সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকা চলচ্চিত্রটি নিয়ে বারবার তাগাদা দেয়া সত্যেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এমনকি গত মার্চ মাসে একটি উকিল নোটিশ পাঠানোর পরও সেন্সর বোর্ড নীরব থাকে। যার প্রেক্ষিতে গত ১০ই এপ্রিল উচ্চ আদালতে রিট করেন নির্মাতা। তারই প্রেক্ষিতে গত হাইকোর্ট ১৮ এপ্রিল এক নির্দেশনা দেন।
এতে এ ছবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে সেন্সর বোর্ডকে নির্দেশ প্রদান করেন উচ্চ আদালত। পাশাপাশি সেন্সর বোর্ডকে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে চলচ্চিত্রটির সেন্সর সার্টিফিকেট প্রদান না করাটি কেন অবৈধ হবেনা তা জানতে চেয়েছেন।
নির্মাতা বলেন, “২৩ এপ্রিল তারিখে আদালতের আদেশ সেন্সর বোর্ড এ পৌঁছান হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ২৩ এপ্রিল থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সেন্সর বোর্ডকে আগামী ৩০ দিনের ভেতর ‘হৃদয়ের রংধনু’ বিষয়ক সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। নতুবা তা আদালত অবমাননার সামিল হবে। আমরা এখন তাই অপেক্ষায় আছি সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তের।”
২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা প্রথম ছবিটি দেখেন। এর ৯ মাস পর এ বছরের ২৯ অগাস্ট ছবিটিতে আটটি জায়গায় সংশোধনী দিয়ে প্রযোজক ও পরিচালক বরাবর চিঠি দেয় সেন্সর বোর্ড।
তার বিপরীতে ৮ সেপ্টেম্বর পুনরায় ছবিটি সেন্সরবোর্ডে জমা দেন নির্মাতা। এরপর ১০ অক্টোবর ছবিটির আবার প্রিভিউ হয়। এ সভায় পর্যটন কর্পোরেশনের মতামত চাওয়া হয়।
যার প্রেক্ষিতে চলতি বছর ১০ জানুয়ারি চলচ্চিত্রটিকে ছাড়পত্র দিতে সুপারিশ জানায় পর্যটন কর্পোরেশন। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে সেন্সরবোর্ডের নীরবতার প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন নির্মাতা।
দেশের ৫৪টি জেলার বিভিন্ন পর্যটন লোকেশনে চিত্রায়িত হয়েছে পর্যটনের উপর নির্মিত ‘হৃদয়ের রংধনু’ চলচ্চিত্রটি।
ছবিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন শামস হাসান, মুহতাসিম স্বজন, খিং সাই মং মারমা ও একমাত্র নারী, সার্বিয়ার নাগরিক মিনা পেতকোভিচ।