ষাট ও সত্তর দশকের জনপ্রিয সংগীত তারকা কিশোর কুমার। ৪ আগস্ট খ্যাতিমান ভারতীয় সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারের ৮৮তম জন্মদিনে তাকে স্মরণ করেছেন তার সহকর্মী লতা মুঙ্গেশকর।
Published : 04 Aug 2017, 07:20 PM
‘তেরে মেরে মিলন কি ইয়ে র্যায়না’, ‘ভিগি ভিগি রাতো মে’, ‘ন্যায়নো কি স্বপ্না’ ‘দিল কি বাতে’ সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানে কন্ঠ দিয়েছেন কিশোর কুমার ও লতা মুঙ্গেশকর। ১৯৪৮ সালের ‘জিদ্দি’ সিনেমার ‘ইয়ে খুন আয়া রে’ শিরোনামের এ গানটিতেই প্রথম জুটি বাঁধেন কিশোর কুমার ও লতা মুঙ্গেশকর। দু’জনের একসঙ্গে গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। টুইটারে কিশোর কুমারের সঙ্গে গাওয়া প্রথম সিনেমার গানের ভিডিও প্রকাশ করেছেন লতা। ১৯৪৮ সালের ‘জিদ্দি’ সিনেমার ‘ইয়ে খুন আয়া রে’ শিরোনামের এ গানটিতেই প্রথম জুটি বাঁধেন তারা।
টুইট পোস্ট তিনি বলেন, “সবাইকে শুভেচ্ছা। কিশোর দা’র আজ জন্মদিন। তিনি যেমন ভালো গায়ক ছিলেন, তেমনই ভালো মানুষ ছিলেন। তার কথা সব সময় খুব মনে পড়ে।”
Namaskar.Kishore Da ki aaj jayanti hai.wo jitne acche gayak the utne hi acche insaan the.Mujhe Kishore Da ki kami hamesha mehsoos hoti hai. pic.twitter.com/RpGvgQYkI0
— Lata Mangeshkar (@mangeshkarlata) August 4, 2017
সংগীত জীবনের শুরু:
১৯২৯ সালের ৪ আগস্ট বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কিশোর কুমার। বাবা-মায়ের দেয়া নাম আভাস কুমার গাঙ্গুলী। ‘বোম্বে টকিজ’ স্টুডিওতে কোরাস শিল্পী হিসেবে সংগীত ক্যারিয়ার শুরু করার সময় আভাস কুমারের বদলে কিশোর কুমার রাখেন তিনি নিজেই। পরবর্তীতে এ নামেই জনপ্রিয়তা পান তিনি। ১৯৪৬ সালে ‘শিকারী’ সিনেমার মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।
কিশোর কুমারের জনপ্রিয় গান:
মূলত হিন্দি সিনেমায় গান গেয়ে জনপ্রিয় হলেও বাংলা, মারাঠি, অসমিয়া, কন্নড় ও ওড়িয়া ভাষায় গান গেয়েছেন কিশোর কুমার। ‘আরাধনা’ সিনেমার ‘রূপ তেরা মাস্তানা’ গানের জন্য প্রথমবারের মতো ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জেতেন কিশোর কুমার। আটবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে পুরুষ প্লেব্যাকশিল্পী হিসেবে সর্বোচ্চ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি।
জীবদ্দশায় ‘মেরে স্বপনো কি রানি’, ‘ও হাসিনা’, ‘গাতা রহে মেরা দিল’, ‘জিন্দেগি কা সফর’, ‘ইয়ে দোস্তি’, ‘দিল ক্যায়া করে’, ‘আচ্ছা তো হাম চলতে হ্যায়’ সহ অসংখ্য সাড়াজাগানো গান গেয়েছেন তিনি।
ব্যক্তিজীবন ও কিছু অজানা কথা:
কিশোর কুমারের ব্যক্তিজীবন ছিলো নানা কারণে আলোচিত। ১৯৬০ সালে প্রথম স্ত্রী বাঙালি অভিনেত্রী ও গায়িকা রুমা গুহ ঠাকুরতাকে ডিভোর্স দিয়ে খ্যাতনামা ভারতীয় অভিনেত্রী মধুবালাকে বিয়ে করেন তিনি। ‘চলতি কা নাম গাড়ি’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো দেখা হয় তাদের। এ বিয়ের জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে করিম আব্দুল নামও নেন তিনি। পারিবারিকভাবে এ বিয়ে মেনে না নিলেও দাম্পত্যজীবনে সুখী ছিলেন তারা। ১৯৬৯ সালের মধুবালার মৃত্যুর পর আরও দু’টো বিয়ে করেন এ সংগীত তারকা।
হৃষিকেশ মুখার্জীর ‘আনন্দ’ সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রের জন্য প্রথমে মেহমুদ খান ও কিশোর কুমারকে প্রস্তাব করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাদের ভেতর একটি ভুল বোঝাবোঝির জন্য তা আর হয়ে ওঠেনি। মেহমুদ খানও আগ্রহ দেখাননি ছবিটি নিয়ে। ফলে রাজেশ খান্না ও অমিতাভ বচ্চন বাজিমাৎ করেন সাড়াজাগানো এ সিনেমাটিতে।
ষাট ও সত্তর দশকের জনপ্রিয় এ সংগীত তারকা আলোচিত ছিলেন তার এক অদ্ভূত স্বভাবের কারণে। প্রায়ই সিনেমার গানের জন্য টাকা নিতেন না এ তারকা। এমনই একটি সিনেমা হচ্ছে ‘ডাল মে কালা’।