আয় বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে স্ট্যাম্পের শুল্কহার ব্যাপক হারে বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে এবারের বাজেটে।
Published : 10 Jun 2022, 01:05 AM
দীর্ঘদিন পর অনেক কাজে ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
টাকা ধার ও প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন ধরনের চুক্তি, এফিডেভিট, বিক্রয় দলিল, বিবাহ বিচ্ছেদ, বীমা পলিসি, সংঘস্মারক সই, আমমোক্তার নামা দলিল (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি), পুরস্কার, বিভিন্ন ধরনের বিল বিনিময়, আমদানি বিল, বন্ড, সনদের মত কাজে ব্যবহার করা স্ট্যাম্পের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবকালে তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে এনবিআর বহির্ভূত কর রাজস্ব একটি উল্লেখযোগ্য খাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এ খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার এনবিআর বহির্ভূত খাত হতে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। স্ট্যাম্প শুল্ক এনবিআর বহির্ভূত কর রাজস্ব আহরণের অন্যতম উৎস।
রাজস্ব আহরণ বাড়াতে স্ট্যাম্প অ্যাক্ট, ১৮৯৯ সালের বর্ণিত শুল্কহার ১৯৭৩ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বাড়ানো ও কমানো হয়। তবে স্ট্যাম্প আইনে উল্লেখ করা শুল্কহার খুবই অপ্রতুল।
এজন্য বাস্তবতার নিরিখে সময়োপযোগী করতে ওই আইনের ধারা-৩০ এবং তফসিল-১ সংশোধনের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং স্ট্যাম্প শুল্কহার বাস্তবভিত্তিক হবে বলে যুক্তি তার।
এরমধ্যে প্রাপ্তিস্বীকারপত্রের স্ট্যাম্পের মূল্য ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রকারভেদে ২০ ও ৫০ টাকা, এফিডেভিট ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা, সংঘস্মারক চুক্তি প্রকারভেদে ৫০ থেকে দ্বিগুণ করে ১০০, ২০০ ও ৩০০ টাকা, ঋণ বা দেনার চুক্তি অর্থের উপর প্রকারভেদে শুন্য দশমিক ২ শতাংশ থেকে শুন্য দশমিক ৫ শতাংশ, শুন্য দশমিক ১২ শতাংশ থেকে শূন্য ৩ শতাংশ, বিল অব এক্সচেঞ্জ শুন্য দশমিক ১ ও শুন্য দশমিক শুন্য ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে চুক্তিতে উল্লেখিত অর্থমূল্যের শূন্য দশমিক ২ ও শুন্য দশমিক ১ শতাংশ, বিল অব লেডিং ৫০, ১০০ ও ৫০০ টাকার বদলে যথাক্রমে ২০০, ৫০০ ও এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
বন্ডের ক্ষেত্রে ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা, কাস্টমস বন্ড এক ও দুই হাজার টাকা থেকে দুই হাজার টাকা, ডেলিভারি অর্ডার ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা, বিবাহ বিচ্ছেদ ৫০০ থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা, সুপ্রিম কোর্টে একজন আইনজীবি হিসেবে উপস্থিতির স্ট্যাম্পের পারমিশন এক হাজার ও ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা, শেয়ার বরাদ্দের স্ট্যাম্প ২০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা, কোম্পানির সংঘ্স্মারক ১ হাজার, ২ হাজার ও ৩ হাজার টাকা বাড়িয়ে যথাক্রমে দুই হাজার, পাঁচ হাজার ও সাত হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে দত্তক নেওয়ার স্ট্যাম্প ৫ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্ট্যাম্প আইনের তফশিল ১ এ এরকম অনেকগুলো স্ট্যাম্পের শুল্ক কমানো ও অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।