নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনেই পাহাড়, বন ও নদী রক্ষা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
Published : 22 May 2018, 07:49 PM
বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে এক নাগরিক সমাবেশ এবং মানববন্ধনে এ কথা বলেছেন তারা।
২৫তম বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবসে বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন পিপলস ভয়েস যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
‘সেলিব্রেটিং টোয়েন্টিফাইভ ইয়ারস অব অ্যাকশন ফর বায়োডাইভারসিটি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
সমাবেশে বায়োডাইভারসিটি রিসার্চ গ্রুপ অব বাংলাদেশ (বিআরজিবি) সভাপতি বদরুল আমিন ভুঁইয়া বলেন, “যে বাতাস আমরা গ্রহণ করি, যে পানি আমরা পান করি এবং যে খাদ্য আমরা খাই, তার সবই জীববৈচিত্র্যের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান সময়ে ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে আছে আমাদের জীববৈচিত্র্য। জীববৈচিত্র্য একটি দেশের অমূল্য সম্পদ।
“অথচ নানাভাবে আমরা এর ক্ষতি সাধন করছি। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের বন বাঁচাতে হবে। বাঁচাতে হবে আমাদের নদী, খাল ও জলাশয়গুলো। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের এই প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে।”
পিপলস ভয়েসের উপদেষ্টা একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যেমন শাস্তি নির্ধারণ করা আছে ঠিক তেমনি যারা নদী দখল ও দূষণ করছে এবং পাহাড় কাটছে তাদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নির্ধারণ করতে হবে।
হালদা গবেষক মোহাম্মদ আলী আজাদী সমাবেশে বলেন, চট্টগ্রামের দুই প্রধান নদী কর্ণফুলী ও হালদা। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে নদী দুটি লোভের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
“কর্ণফুলীকে রক্ষায় একে পুরোপুরি অবৈধ দখল মুক্ত করতে হবে। হালদা একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অনন্য নদী। এর স্বকীয়তা অক্ষুন্ন রেখেই সব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে যেন নদীটি তার বৈশিষ্ট্য কোনোভাবেই না হারায়।”
পিপলস ভয়েস সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কঠোর হস্তে পাহাড় দখল ও কাটা, নদী দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না।
“পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী অসংখ্য প্রকল্প সারা বিশ্বেই গ্রহণ করার পর এর ক্ষতিকারক প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। এরপরও এ ধরনের আর কোনো প্রকল্প গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পাহাড় ও নদী বাঁচাতে না পারলে বাংলাদেশের বাস্তুতন্ত্র বাঁচবে না।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক এম জামাল উদ্দিন আহমেদ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক রাশেদ হাসান।
উপস্থিত ছিলেন বোধন আবৃত্তি স্কুলের অধ্যক্ষ রণজিৎ রক্ষিত, শিক্ষাবিদ অজিত আইচ, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের নির্বাহী উৎপল বড়ুযা, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুনীল ধর, লেখক-গবেষক তুষার কান্তি বসাক, সাংস্কৃতিক সংগঠক হাবিব বিপ্লব ও পিপলস ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুর রহমান।