দীর্ঘ ২৭ বছর পর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন জাহাজ।
Published : 13 Mar 2018, 06:06 PM
মঙ্গলবার বিএসসি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর ইয়াহইয়া সৈয়দ বলেন, “চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মাণাধীন ছয়টি জাহাজের মধ্যে প্রথমটি ‘বাংলার জয়যাত্রা’ জুলাই মাসে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
“বাকি জাহাজগুলো পর্যায়ক্রমে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে বহরে যুক্ত হবে। বর্তমানে জাহাজগুলোর ‘মেসিভ ব্লক রেইজিং’ ও ব্লকগুলো জোড়া লাগানোর কাজ চলছে।”
চায়না ন্যাশনাল ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট মেশিনারিজ করপোরেশন থেকে এক হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ছয়টি জাহাজ কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি অয়েল ট্যাংকার ও বাকিগুলো বাল্ক ক্যারিয়ার।
এতে চীন সরকার দিচ্ছে এক হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা এবং বিএসসির নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ৩৯৫ কোটি টাকা।
‘বাংলার জয়যাত্রা’ জাহাজটি বাল্ক ক্যারিয়ার বলে মতবিনিময়ে জানানো হয়।
আগামী ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএসসির বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষ্যে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বিএসসির এমডি বলেন, দেশের বর্তমান চাহিদা বিবেচনায় বিভিন্ন ধরন ও আকারের কমপক্ষে ৪০-৫০টি জাহাজ থাকা বাঞ্চনীয়।
“বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে না পারায় বিগত ২৭ বছরে বিএসসির বহরে নতুন কোনো জাহাজ সংযোজিত হয়নি।”
১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত বিএসসির বহরে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে যুক্ত হয় মোট ৩৮টি জাহাজ। পুরনো ও বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক হওয়ায় ধাপে ধাপে ৩৬টি জাহাজ বিক্রি করে দেওয়া হয়।
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকা দুটি লাইটার ট্যাংকারের গড় বয়স ৩০ বছর।
ইয়াহইয়া সৈয়দ বলেন, “আমাদের মেরিটাইম সেক্টর যেন আবার জেগে ওঠে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
সভায় জানানো হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পরিচালনা খাতে ৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং অপরিচালন ও অন্যান্য খাতে ৩৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আয় করে।
বিপরীতে পরিচালনা ব্যয় ছিল ৫৪ কোটি ৫০ লাখ এবং প্রশাসনিক ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় হয় ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
সভায় বিএসসির পক্ষ থেকে কয়লা পরিবহনের জন্য ছয়টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ও ১০টি লাইটার বাল্ক ক্যারিয়ার, এলএনজি পরিবহনের জন্য দুটি এলএনজি ভেসেল, ক্রুড অয়েল পরিবহনের জন্য দুটি মাদার ট্যাংকার, জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য দুটি মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এবং ফিডার সার্ভিস চালুর জন্য চারটি সেলুলার কন্টেইনার জাহাজ কেনার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়।