চট্টগ্রামে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) কারখানার ট্যাংক বিস্ফোরণে অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়ানোর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
Published : 24 Aug 2016, 09:11 PM
বুধবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়া গ্রামে বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মালিকানাধীন ডিএপি কারখানায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি।
পরিদর্শনের পর সিইউএফএল’র গেস্ট হাউজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত খবরা-খবর নিচ্ছেন। এ ঘটনায় আমি দুঃখিত, মর্মাহত।
“যেটা ঘটেছে সেটা নিয়ে তো আমাদের কিছু করণীয় নাই। দুর্ঘটনা কোনো ব্যক্তির কারণে ঘটেছে কি না, সেটা আমরা দেখব। কোনো ব্যক্তির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত সোমবার রাতে কর্ণফুলী নদীর তীরে আনোয়ারার রাঙাদিয়ায় চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) লাগোয়া ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কারখানার ইউনিট-১ এর অ্যামোনিয়া ভর্তি একটি ট্যাংক ফেটে গিয়ে গ্যাস নিঃসরিত হয়।
গ্যাসে আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন; এছাড়া ওই এলাকায় বেশ কিছু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি গরু ও জলাশয়ের মাছ মারা যায়।
৫০০ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ওই ট্যাংকে দুর্ঘটনার সময় ২০০টন অ্যামোনিয়া মজুদ ছিল বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
দুর্ঘটনার পর সিইউএফএল’র কর্মকর্তা-কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঘটনার দিন রাত ৪টার দিকে ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে’ আসে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষতির বিষয়টা স্বীকার করে তিনি বলেন, “গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় কিছু ক্ষতি হয়েছে। এখনো কিছু আভাস (অ্যামোনিয়া গ্যাসের গন্ধ) পাচ্ছি।”
দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ে ইতোমধ্যে বিসিআইসি ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে, যাতে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ কয়েকটি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের আরও একটি কমিটি গঠন করেছে।
শিল্পমন্ত্রী আমু বলেন, “আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পাব। তখন আমরা জানতে পারব কেন এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের শোডাউন-সেলফি
মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় সার কারখানার নিরাপত্তারক্ষীদের বাধা উপেক্ষা করে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দুর্ঘটনাস্থলে ঢুকে পড়তে দেখা যায়।
বিস্ফোরিত অ্যামোনিয়া গ্যাসের রিজার্ভ ট্যাংকটি পরিদর্শন করার সময় মন্ত্রীর চারপাশ ঘিরে স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হুড়োহুড়ি ও ভিড়ের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে মন্ত্রী দ্রুত গাড়িতে উঠে গেস্ট হাউজে চলে আসেন। হট্টগোলের সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদও।
এসময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে দুর্ঘটনাস্থলে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়।