চট্টগ্রামে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য সন্দেহে গ্রেপ্তার পাঁচ যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ বলছে, জঙ্গি সংগঠনের মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে রয়েছে ইসলামী ছাত্র শিবির।
Published : 01 Aug 2016, 08:21 PM
সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠনটিকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের পর পুলিশও একই কথা বলল।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে শিবির নেতারা বলে আসছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে সরকার ছাত্রশিবিরকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করছে।
রোববার রাতে বন্দর নগরীর পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম পুলিশ।
তারা হলেন- আক্কাস আলী ওরফে জাহিদুল ইসলাম ওরফে নয়ন (২৩), আতিকুল হাসান ওরফে ইমন (২৬), জামশেদুল আলম ওরফে হৃদয় (২১), মো. রুবেল (২৬) ও মো. মহিউদ্দিন (১৮)।
আক্কাস চট্টগ্রাম কলেজের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ, আতিকুল সরকারি কমার্স কলেজে এমবিএস, জামশেদুল আলম ওমরগনি এমইএস কলেজ বাংলা প্রথম বর্ষের, রুবেল বেসরকারি সাউর্দার্ন ইউনিভার্সিটির বিবিএ সেকেন্ড সেমিস্টার এবং মহিউদ্দিন একটি মাদ্রাসার ছাত্র।
তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছিল।
সোমবার চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আক্কাস ছাত্র শিবিরের সাথী।
কাঠগড়ের মুসলিমাবাদ এলাকার শেরে পতেঙ্গা ভবনের চতুর্থ তলায় আক্কাসের ভাড়া বাসায় বসে তারা নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে ‘গোপন বৈঠক’ করছিল বলে জানান তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ও তার সহযোগী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির এধরনের হামলার পরিকল্পনা ও নতুন করে ষড়যন্ত্রের নকশা করছে।
“পাশাপাশি জামায়াত-শিবির বিভিন্ন জঙ্গি গ্রুপকে দিয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে,” বলেন তিনি।
এর আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বারবকুণ্ড থেকে আনসারুল্লাহর সন্দেহভাজন চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
তাদের মধ্যে মুসআব ইবনে উমায়ের (২৫) চট্টগ্রামে আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের অন্যতম সংগঠক বলে পুলিশ জানিয়েছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ বলেন, সীতাকুণ্ডে গ্রেপ্তার যুবকদের সঙ্গে আক্কাসসহ পাঁচজনের যোগাযোগ ছিল এবং পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) নাজমুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতরা মুসার মাধ্যমে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তারা বিভিন্ন সময়ে মুসার সাথে বৈঠক করেছিল বলেও স্বীকার করেছে।”
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, সাতটি মোবাইল, ১১টি জিহাদি বই পাওয়া গেছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাজমুল।
গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ প্রথমবর্ষের ছাত্র আব্দুল হান্নান ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে লাদেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, আব্দুল্লাহ ঠাকুরগাঁও এলাকায় আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের অন্যতম সংগঠক। সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেই চট্টগ্রামে এসেছিলেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইমতাজুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহর বড় ভাই আবুল হাসনাতও জঙ্গি সংগঠনে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ আগে ঠাকুরগাঁওয়ে চাপাতিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে পুলিশ জানায়।