স্পিনারের বল সুইপ করতে চাইলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে খেলতে পারলেন না, বল লাগল প্যাডে। তার হতাশার যে চিৎকার, শোনা গেল বেশ দূর থেকেও। পরে একজন পেসারের বলে করতে চাইলেন রিভার্স হিট, ব্যর্থ হয়ে সজোরে ব্যাট দিয়ে মারলেন নিজের প্যাডে। তবে এমন মুহূর্ত অবশ্য কমই এলো। নেটে যেভাবে চাইলেন, বেশির ভাগ শট সেভাবেই খেলতে পারলেন সাকিব। একার অনুশীলন দিয়ে শুরু হলো বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের টেস্টে ফেরার লড়াই।
Published : 02 Dec 2021, 04:54 PM
জাতীয় দলের অনুশীলন শুরুর আড়াই ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার মিরপুরের ইনডোরে অনুশীলন শুরু করেন সাকিব। দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে নাম থাকলেও করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল না আসায় শুরুতে দলের সঙ্গে ছিলেন না তিনি।
ইনডোরের বাইরের নেটে সকাল ১১ থেকে ঘণ্টাখানেক ব্যাট করেন। ছয় নেট বোলারের তিন জন ছিলেন পেসার। অফ স্পিনার, বাঁহাতি স্পিনার ও লেগ স্পিনার ছিলেন একজন করে। নিজের মতো করেই ব্যাটিং করেন সাকিব। বেশিরভাগ শটই খেলেন মাঝ ব্যাটে।
ম্যাচে তিনি নিজেকে গুটিয়ে রাখেন কমই। সব সময়ই রানের সুযোগ খোঁজেন। নেটে তার ব্যাটিংয়েও দেখা গেল সেই তাড়না। প্রথাগত শটের পাশাপাশি রিভার্স সুইপ, রিভার্স স্কুপের মতো শটও খেলতে দেখা গেল তাকে।
১২টার দিকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়ার পর ছিলেন বিশ্রামে। দেড়টার দিকে মাঠে এসে অনুশীলন শুরু করে বাংলাদেশ দল। নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব। ইনডোরে বোলিং মেশিনে কিছুক্ষণ ব্যাটিং করে বাইরে এসে আড্ডা দেন সতীর্থদের সঙ্গে।
জাতীয় দলের নেটে এ দিন আর ব্যাটিং করেননি সাকিব। পরে করেন স্রেফ দুটি বল, দীর্ঘদিনের সতীর্থ মুশফিকুর রহিমকে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৯ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান সাকিব। এরপর থেকে মাঠের বাইরে থাকা এই অলরাউন্ডার পরে শের-ই-বাংলায় দৌড়ান কয়েক চক্কর।
মাঠে ফেরার জন্য কয়েক দিন থেকেই নিজের মতো করে অনুশীলন করছেন সাকিব। তার ঘনিষ্ঠ কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গেও কয়েকটি সেশনে কাজ করেছেন ব্যাটিং নিয়ে।
সব ঠিক থাকলে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট দিয়ে গত ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে টেস্ট খেলবেন সাকিব। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সবশেষ ৬ টেস্টের মাত্র দুটিতে খেলেন তিনি। বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের মাঝপথে চোট পেয়ে ছিটকে যান। খেলতে পারেননি মিরপুরে পরের টেস্টে। পরে আইপিএলের জন্য খেলেননি শ্রীলঙ্কায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে।
জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট দিয়ে ফেরেন এই সংস্করণে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়া হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য খেলতে পারেননি পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে। সেই চোট কাটিয়ে আবার মাঠে ফিরছেন আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের পঞ্চম সেরা অলরাউন্ডার।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ব্যাট হাতে দারুণ সফল সাকিব। ৪ টেস্টে ৮ ইনিংসে এক সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে তার রান ৪১২। সর্বোচ্চ ১৪৪। গড় ৬৮.৬৬। টেস্টে কোনো দলের বিপক্ষে তার সর্বোচ্চ গড় এটাই।
ঠিক বিপরীত চিত্র বোলিংয়ে। ৬ ইনিংসে নিতে পেরেছেন কেবল ৯ উইকেট। সেরা ৮২ রানে ৬ উইকেট। গড় ৬৩.৮৮। বোলিংয়ে কেবল পাকিস্তানের বিপক্ষেই তার গড় পঞ্চাশের বেশি। একাধিক টেস্ট খেলেছেন এমন দেশের মধ্যে কেবল তাদের বিপক্ষেই বাঁহাতি এই স্পিনারের উইকেট দুই অঙ্কে যায়নি।