তৌহিদ হৃদয় উইকেটে গিয়ে প্রথম দুই বলেই মারলেন বাউন্ডারি, শামীম হোসেন পাটোয়ারি প্রথম বলেই ছক্কা! যে ধরনের ভয়ডরহীন ক্রিকেট দাবি করে টি-টোয়েন্টি সংস্করণ, সেটির নমুনা মেলে ধরলেন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান। চার দিনের ম্যাচ ও একদিনের ম্যাচের সিরিজ জয়ের পর একমাত্র টি-টোয়েন্টিও জিতে নিল বাংলাদেশের উঠতি ক্রিকেটাররা।
Published : 16 Mar 2021, 04:02 PM
টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের জয় ৩০ রানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান।
ওপেনিংয়ে সাইফ হাসান ৩৬ বলে ৪৮ রান করলেও শুরুটা খুব ভালো ছিল না দলের। ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে দেয় হৃদয়ের আগ্রাসী ব্যাটিং। পাঁচে নেমে তিনি উপহার দেন ৩৫ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। শামীম হোসেন চার ছক্কায় করেন ১১ বলে ২৮ রান।
আয়ারল্যান্ড সেভাবে জয়ের সম্ভাবনাই জাগাতে পারেনি। ১১ বল বাকি থাকতে অলআউট তারা ১৫৪ রানে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা হয় বাউন্ডারি দিয়ে। আয়ারল্যান্ড আক্রমণ শুরু করে গ্যারেথ ডেলানির লেগ স্পিন দিয়ে। প্রথম বল শর্ট পেয়ে কাজে লাগান সাইফ হাসান।
আইরিশরা সাফল্যও পেয়ে যায় ওই ওভারেই। ডেলানির আরেকটি শর্ট বলে বাজে শটে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন আনিসুল ইসলাম ইমন।
একদিনের ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের নায়ক মাহমুদুল হাসান জয় ব্যর্থ টি-টোয়েন্টিতে। তিনে নেমে ৫ রানে জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। মার্ক অ্যাডায়ারের স্টাম্প সোজা বলে স্লগ করে বোল্ড হন তিনি ৮ রানে।
ইয়াসির আলি চৌধুরি নামার পর একটু গতি আসে ইনিংসে। ডেলানিকে চার মারার পর তিনি টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন বাঁহাতি পেসার জশ লিটলকে। এরপর সাইফও আত্মবিশ্বাস পেয়ে দ্রুত তিনটি বাউন্ডারি আদায় করে নেন তিন ওভারে।
সম্ভাবনাময় এই জুটি থামে বাজে শটে ইয়াসিরের বিদায়ে। কার্টিস ক্যাম্পারের অনেক বাইরের বলে আলগা শটে ক্যাচ দেন তিনি কিপারকে (১৬ বলে ২২)।
ইনিংসের গতিপথ পাল্টে দেওয়া জুটি এরপরই। হৃদয় উইকেটে গিয়েই শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। ক্যাম্পারকে প্রথম বলেই কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারির পর দ্বিতীয় বলে চার মারেন কবজির জোরে। পরে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কায় ওড়ান ডেলানিকে। আরেক লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন সাইফ।
দুজনের জুটিতে ৫২ রান আসে ৩১ বলে।
৪৮ রানে সাইফ আউট হন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে, যেটি ছেড়ে দিলে ওয়াইড হতো নিশ্চিত।
রান আউটে কাটা পড়ে শেষ হয় শামীমের ঝড়। হৃদয় ফিফটি স্পর্শ করেন ২৮ বলে। দল পায় ভালো পুঁজি।
আইরিশরা দ্রুত রান তোলার জন্য ওপেনিংয়ে নামায় ডেলানিকে। কিন্তু তিনি আউট হন সুমন খানের প্রথম ওভারেই।
দ্বিতীয় উইকেটে স্টিভেন ডোহেনি ও হ্যারি টেক্টর দলকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করলেও পেরে ওঠেননি বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে। তানভির ও আমিনুল দলকে উইকেট এনে দেন নিয়মিত বিরতিতে। এমনকি অনিয়মিত দুই অফ স্পিনার শামীম ও সাইফও পান উইকেট।
চার দিনের ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর একদিনের ম্যাচের সিরিজে আইরিশরা হারে ৪ ম্যাচের সবকটি। এবার টি-টোয়েন্টিও হেরে তারা দেশে ফিরছে খালি হাতেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বিসিবি ইমার্জিং দল: ২০ ওভারে ১৮৪/৭ (সাইফ ৪৮, আনিসুল ০, মাহমুদুল ৮, ইয়াসির ২২, হৃদয় ৫৮, শামীম ২৮, মাহিদুল ৯, আমিনুল ১*, সুমন ২*; ডেলানি ৩-০-২৪-১, লিটল ৪-০-৩৯-০, অ্যাডায়ার ৩-০-২০-১, চেইস ৪-০-৩৬-২, হোয়াইট ৪-০-৩৭-০, ক্যাম্পার ১-০-১৪-১, গেটকেক ১-০-১৪-১)।
আয়ারল্যান্ড উলভস: ১৮.১ ওভারে ১৫৪ (ডেলানি ০, ডোহেনি ২৯, টেক্টর ২২, টাকার ৩৮, ক্যাম্পার ১, রক ১৬, গেটকেক ২৬*, অ্যাডায়ার ১১, লিটল ১, হোয়াইট ৭, চেইস ১; সুমন ৩.১-০-২৮-৪, মুকিদুল ৩-১-১৯-০, তানভির ৪-০-৩২-২, শামীম ৩-০-২৮-১, আমিনুল ৪-০-৩৭-২, সাইফ ১-০-৯-১)।
ফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৩০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান।