“অনেক ভালো লাগছে ভাই…”, তাসকিন আহমেদের মুখে চওড়া হাসি। ভালো যে লাগছে, এটা মুখে না বললেও চলত। তার হাসি, চোখে-মুখে দীপ্তির আভাটাই বলে দিচ্ছিল, নিজের বোলিং আর দলের জয়ে কতটা ভালো লাগছে তার।
Published : 10 Jun 2017, 09:17 PM
ক্ষনিকের জন্য হাসিটা মিলিয়ে গেল, কণ্ঠে একটু আক্ষেপের সুর, “এই ম্যাচে ভালো করতেই হতো.. খুব চাপে ছিলাম।”
চাপের কারণ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্স। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে গা-গরমের ম্যাচ দুটিতে ভালো বোলিং করতে পারেননি। চারপাশে সমালোচনার ঝড়। খরুচে বোলিং নিয়ে প্রশ্ন।
দল থেকে অবশ্য চাপ ছিল না। এক ম্যাচ আগেই ছেলেটা হ্যাটট্রিক করেছে শ্রীলঙ্কায়, দল সেটা জানে। আর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তো তাকে আগলেই রাখেন। অনুপ্রেরণা দেন সবসময়। তবে চারপাশে সমালোচনা এত বেশি ছিল যে আঁচ ভালোভাবেই লেগেছিল তাসকিনের।
প্রস্তুতি ম্যাচকে লোকে এত গুরুত্ব দিয়ে নেওয়াতেই অবাক তাসকিন।
“আমি আসলে প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে কখনোই সেভাবে ভালো করতে পারি না। মূল ম্যাচের যে চাপ, যে উত্তেজনা, সেসব আমাকে তাতিয়ে তোলে, অনুপ্রাণিত করে। এমন নয় যে ইচ্ছে করে খারাপ করেছি। কিন্তু সবসময় চাওয়া মতো হয় না।”
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটাতে হয়েছে চাওয়া মতো। সুযোগ পেয়ে ভালো করতে মরিয়া ছিলেন তাসকিন। প্রথম বলটিই ছিল দারুণ। পরাস্ত হন মার্টিন গাপটিল। সেটিই বেধে দেয় সুর।
“প্রথম বলটি ভালো হওয়ার পর মনে হচ্ছিলো আজ ছন্দে থাকব। নিজের বোলিংয়ে আমি এদিন মোটামুটি সন্তুষ্ট। পেস ছিল, বাউন্স ছিল, লাইন-লেংথ বেশ ভালো ছিল, বল কাট করেছে, সুইং করেছে। দুটি উইকেটও পেয়েছি। যা করেছি তাতে খুশি।”
দুটি উইকেটই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এনে দিয়েছিলেন শুরুর ব্রেক থ্রু। লুক রনকি আউট হয়েছে গতি সামলাতে না পেরে। পরে শেষ দিকে নিয়েছেন রস টেইলরের উইকেট, শেষ দিকে যিনি হতে পারতেন বিপজ্জনক।
তাসকিনের গতিকে কাজে লাগিয়ে স্কুপ করতে চেয়েছিলেন টেলর। বুঝতে পেরে তাসকিন করেন স্লোয়ার। উইকেটের পর উদযাপনটাও ছিল দেখার মত। পরিকল্পনা করে আউট করেছিলেন বলেই তাসকিনের উল্লাস ছিল অমন বাঁধনহারা।
“আগের বলটাই বাউন্সার দিয়েছিলাম। তার পরই ঠিক করেছিলাম পরের বলটি স্লোয়ার করব। সেভাবেই রান আপে ছুটেছি। পরে দেখি টেইলর স্কুপ মতো করতে যাচ্ছে। তখন স্লোয়ারই, কিন্তু শেষ মুহূর্তে লেংথ অ্যাডজাস্ট করতে হলো। সব খুব ভালোভাবে হয়েছ বলেই ওভাবে উদযাপন ছিল। খুব ভালো লাগছিল।”
তাসকিনের যত ভালো লাগবে, তত ভালো থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তার মতো একজন গতিময় পেসারকে কত বছর ধরে খুঁজেছে দল!