বাংলাদেশের ক্রিকেট একটা কথা খুব প্রচলিত, সবচেয়ে বড় ইনজুরি বিশেষজ্ঞ নাকি মাশরাফি বিন মুর্তজা। সাতটি অস্ত্রোপচার ও ক্যারিয়ার জুড়ে ছোট-বড় এত চোট সামলেছেন যে, এসবের খুঁটিনাটি তার নখদর্পনে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক কথা বললেন মু্স্তাফিজের অস্ত্রোপচার, এটার শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো নিয়ে। সতর্ক করলেন ভবিষ্যতের জন্য, বাংলাদেশের ক্রিকেটের কিভাবে সামলানো উচিত মুস্তাফিজকে। বিশ্বাস দিলেন, আগের চেয়েও ধারালো হয়ে ফিরবেন মুস্তাফিজ।
Published : 11 Aug 2016, 09:46 PM
অপারেশন টেবিলের সঙ্গে আপনার প্রথম দেখা তো মুস্তাফিজের মতোই, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে, মনে পড়ে?
মাশরাফি মুর্তজা: প্রথমবার তো আমার অপারেশন হলো ভারতে। বেঙ্গালোরে। একটু ভুল অপারেশন হয়েছিল। তবে আমাকে তারা আতিথেয়তা দিয়েছিল দারুণ। তাই সময়টা ভালোই কেটেছিল। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় তো আরও প্রফেশনাল কাজ হয়। মুস্তাফিজকে নিয়ে ভয় নেই।
মুস্তাফিজের অপারেশনও জটিল নয়। স্পোর্টস পারসনদের মাসলগুলো তো মাসল বিল্ড হওয়াই থাকে। পোস্ট অপারেটিভ বিপদ বা শঙ্কা তাই বেশি থাকে না। ব্যথা-ট্যাথা থাকে। সমস্যা হলো, এরপর ওকে ৫-৬ মাস কঠিন সময় পারতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে।
তারপরও অপারেশন শব্দটিতেই প্রথমবার অনেকটা ভয় কাজ করার কথা!
এমনিতে আমার সঙ্গে ওর কথা হয়েছে নিয়মিত। অপারেশন নিয়ে কথা কম হয়েছে, অন্য সব কথাই বেশি হয়েছে। মজা-টজা করেছি।
মানসিক ভাবে মুস্তাফিজ কতটা শক্ত?
মাশরাফি: আমার মনে হয় না ওর খুব বেশি সমস্যা হবে। অন্য আট-দশজন ক্রিকেটার হলে হয়ত আমি চিন্ত করতাম। কিন্তু মুস্তাফিজ বলে কথা, ওকে নিয়ে ভয় নেই। আমরা আছি, বোর্ড আছে, মিডিয়া ও জনসাধারণ, সবাই ওর পাশে। এটা বিশাল একটা সাপোর্ট।
আপনার তো কাঁধের চোটে কখনও পড়তে হয়নি?
কাঁধের অপারেশন বলে কাঁটাছেড়া বেশি নেই। অন্য জায়গায় হলে যেমন পিঠ হলে অনেকটুকু কেটে ফেলে বা হাঁটুতে হলে বাটি পুরো খুলে ফেলে, কাঁধের অপারেশনে সেরকম কিছু নেই।
যত ছোটই হোক, অপারেশনের তাৎক্ষণিক কিছু শারীরিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চয়ই থাকে?
মাশরাফি: আমার যখন দুই হাঁটুতে অপারেশন হলো, তখন প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা ধরে হয়েছিল অপারেশন। ৬ ঘন্টা ছিলাম সংজ্ঞাহীন। পুরো হাঁটু খুলে ফেলেছিল। আগের অপারেশনে যে ভুল হয়েছিল, অন্য একটা হাড় ভুল করে কেটে ফেলেছিল, সেটা নিয়ে তারা অবাক হয়েছে, আলোচনা করেছে আমাকে অপারেশন টেবিলে রেখেই। টানা চারদিন প্রচণ্ড স্ট্রাগল করেছি।
মুস্তাফিজের ক্ষেত্রে এরকম হবে না। ব্যথা তো কিছু থাকবেই। তবে হাঁটুর মতো তীব্র না হয়ত। তবে আর্থোস্কপি করা যায়। কিন্তু আমারটা সমস্যা ছিল লিগামেন্টে, সেখানে আর্থাস্কোপি করা যায় না। কাধের ক্ষেত্রে আর্থাস্কোপি, দুটি ছিদ্র করে কাজ করে ফেলা যায়।
ক্যারিয়ারের শুরুতেই অস্ত্রোপচার, মুস্তাফিজের ভবিষ্যতের পথচলায় কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?
মাশরাফি: অনেকে নেতিবাচকভাবে দেখতে পারে। অপারেশন হচ্ছে, অবশ্যই এটা ভালো কিছু নয়। তবে ইনজুরি হয়ে গেলে তো কিছু করার নেই। এর মধ্যে ইতিবাচক দিকগুলো এখন ভাবতে হবে আমাদের।
যেমন, এখন সে জানল যে কিভাবে নিজেকে মেইনটেইন করতে হবে। আরও সাবধান হবে যে কতটুকু খেলতে হবে, কতটা অনুশীলন করতে হবে। উপলব্ধি করতে পারবে, বোলিংয়ের জন্য শরীরের কোন জায়গাগুলি সুনির্দিষ্ট করে গুরুত্বপূর্ণ। নইলে এরকম আবার হতে পারে। সবার জন্য এই ধাক্কা হতে পারে একটা শিক্ষা।
অনেকে ধারণা করছে যে মুস্তাফিজ হয়ত আগের মত ফিরবে পারবে না। এটা পুরো ভুল ধারণা। একটা ব্যাপার হলো, মুস্তাফিজ অর্ধেক ফিরে এলেও ওকে সামলানো কঠিন। আমি আগেও বলেছি, মুস্তাফিজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বা হেঁটে হেঁটে গিয়ে বল করলেও ওকে খেলা কঠিন। তবে অর্ধেক নয়, রিহ্যাব ভালোভাবে করতে পারলে আগের মুস্তাফিজ থেকে আরও ভালোভাবে ফিরবে।
আরও ভালো ভাবে ফেরা কিভাবে সম্ভব?
মাশরাফি: কারণ, ৬ মাস সময়ে পুরো শরীরটাকে গড়ে তুলতে পারবে সে। রিহ্যাবে শুধু যে কাঁধ নিয়ে কাজ হবে, তা নয়। হাঁটু, অ্যাঙ্কেল, পিঠ, কাঁধ…যে চার-পাঁচ জায়গা পেস বোলিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সবকটা জায়গা আরও শক্তিশালী করে ফিরবে।
এই ৬ মাসে আমাদের খুব বেশি খেলা নেই। তাই খুব নেতিবাচক দেখছি না। বরং শুরু থেকে যতটা ক্রিকেট খেলছে, এই ধাক্কাটা স্বাভাবিকই ছিল। আমার কাছে মনে হয়, একদিক থেকে এটা ভালো যে ৬ মাস পর সে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে।
মাশরাফি: আমি কিন্তু শুরু থেকেই বলছি, মুস্তাফিজকে ঠিক করতে হবে কোনটা খেলবে, কোনটা নয়। বেশি খেলে ফেলেছে মানে কিন্তু কাউকে দোষ দিচ্ছি না। ব্যপারটা হলো, ওর মতো একটা সম্পদ পাওয়া খুব বিরল। ওর ভেতর এই সামর্থ্য আছে যে আমাদের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট জেতাতে পারে। ক্রিকেট জাতি হিসেবে আমরা ভাগ্যবান যে ওর মতো একজন পেয়েছি।
প্রথম কথা হলো, আমি চাইব সব কিছুর আগে ও বাংলাদেশের হয়ে খেলুক। বাংলাদেশের হয়ে যেন একটা ম্যাচও মিস না করে। তার পর অন্য কোনটা খেলবে না খেলবে, সেটা ঠিক করুক। আর্থিক ব্যাপার যেহেতু আছে, আইপিএল খেলবে। তারপর অন্যগুলোর মধ্যে বাছতে হবে।
ওয়াসিম আকরাম কাউন্টিতে দারুণ করেছে, কিন্তু সে গ্রেট হয়েছে পাকিস্তানের হয়ে খেলে। ওয়াকার বা ম্যাকগ্রা বা ম্যালকম মার্শাল, সবাই দেশের হয়ে খেলেই গ্রেট। মুস্তাফিজকেও গ্রেট হতে হলে বাংলাদেশের হয়ে খেলেই হতে হবে। আমি সেটাই চাই। ওয়াসিম দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছে, ম্যাকগ্রা জিতিয়েছে, ব্রেট লি জিতিয়েছে, মুস্তাফিজও দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিক। ওর ভেতরে গ্রেটনেসের উপাদান আছে। আমাদের দল এখন অনেক ভালো, অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে। সঙ্গে মুস্তাফিজ থাকলে সবই সম্ভব।
একটু পেছন ফিরে তাকালে, বাংলাদেশের হয়ে টানা খেলা এবং বেশ কয়েকটি চোটের পর, এবারই আইপিএল খেলাটা কতটা জরুরি ছিল? এখানে অনেক ধকল গেছে!
মুস্তাফিজ: আইপিএল আপনি আটকাতে পারবেন না। একটা কথা বলে রাখি, দেশের হয়ে খেলায় সবকিছুর আগে কাজ করে প্যাশন। আপনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জিজ্ঞেস করুন যে টাকা না দিলে খেলবে কিনা, সবাই খেলবে। কিন্তু তার পরও একটা ক্রিকেটারের পরিবার আছে, আর্থিক নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। আরও অনেক বাস্তবতা আছে। আইপিএল থেকে থামানো কঠিন।
কিন্তু এরপর বিগ ব্যাশ, বা ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার টুর্নামেন্ট, সিপিএল, পিএসএল, বিপিএল -এসব থেকে কোনটা খেলবে, কোনটা আর্থিকভাবে ভালো হবে, কোনটায় শরীর ঠিক থাকবে, দেশের হয়ে খেলায় সমস্যা থাকবে না; এসব ভাবতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত কি বোর্ড নিতে পারে না? বা মুস্তাফিজের পরিবার? বা অধিনায়ক হিসেবে আপনি? আপনাদের সঙ্গে কথা বলে বোর্ড ঠিক করে দিতে পারে
ম্যানেজমেন্ট মানে এখানে আমাদের কোচ, সাপোর্ট স্টাফে যারা আছে। ফিজিও-ট্রেনার দেখতে তার ইনজুরির শঙ্কা বা কিছু আছে নাকি। বোলিং কোচকে বুঝতে হবে তার ওয়ার্কলোড কতটা হলো। তারা ইনপুট দেবে হেড কোচকে। তার নিজেকেও বুঝতে হবে। সব মিলিয়েই ঠিক করতে হবে।
অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার তো পুনর্বাসন। একটা দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর প্রক্রিয়া। সেটা কতটা সামলাতে পারবে মুস্তাফিজ?
মাশরাফি: একটা উদাহরণ দিতে পারি। ভারতের বিপক্ষে ওর অভিষেক ওয়ানডের পরের ঘটনা। আমাকে তো জিমে নিয়মিতই যেতে হয়, খেলি আর না খেলি। তো আমি সেদিন জিম গিয়ে দেখি, আগের দিন ৫ উইকেট নিলেও মুস্তাফিজ সবার আগে জিমে। তখনই বুঝে ফেলেছি যে ছেলেটা লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। কিছু ইমপ্রেশন দ্রুতই বোঝা যায়। আমি নিশ্চিত যে ওকে দেখিয়ে দিলে নিজেই পারবে সবকিছু।
সমস্যা হতে পারে, যখন মাঠে খেলা চলবে, তখন ওর জন্য কঠিন হবে। ধরুন বিপিএল চলছে, ও পাশেই রিহ্যাব করছে। এই সময়গুলোয় নিজেকে ধরে রাখা কঠিন। একটা উপায় হতে পারে যদি সে বাড়িতে গিয়ে রিহ্যাব ঠিকঠাক করতে পারে, তাহলে তখন বাড়ি চলে যেতে পারে। এখান থেকে দূরে থাকা হলো! বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে থাকলে সব কিছু ভুলে থাকা যায়।
প্রশ্নটা ছিল আসলে, পুনর্বাসনের শারীরিক ও মানসিক ধাক্কা কতটা সামলাতে পারবে?
মাশরাফি: রিহ্যাব ব্যাপারটা শরীরের চেয়ে বেশি মনস্তাত্ত্বিক। প্যাশন থাকতে হবে। খুবই একঘেয়ে ও ক্লান্তিকর একটি ব্যাপার। একই জিনিস বারবার করতে হবে। সুনির্দিষ্ট মাসল বিল্ড করা বা অন্য জিনিসগুলো ঠিক করার জন্য প্রতিদিনই একই কাজ অনেক সময় ধরে করতে হবে। নতুনত্ব আনার জন্য কিছু করার সুযোগ নেই। যতই বিরক্তি লাগুক, একই কাজ দিনের পর দিন করে যেতে হবে। এটাই সবচেয়ে কষ্টের দিক।
আপনার প্রথম অপারেশনের পর মগবাজারের একটি ক্লিনিকে একা পড়ে থাকতে হয়েছে দিনের পর দিন। দিনের পর দিন একা লড়াই করতে হয়েছে। মুস্তাফিজকে নিশ্চয়ই সেই অভিজ্ঞতার কাছাকাছি কিছুও পেতে হবে না?
মাশরাফি: বাংলাদেশের ক্রিকেটের অবস্থা তো এখন আর সেরকম নেই। আমি ২০০১ সালে অপারেশনের পর মগবাজারের একটা হাসপাতালে ছিলাম। সেখানে যে রিহ্যাব করছিলাম, তাও না। একটা থেরাপি দেওয়া হতো, তবু অনেকটা আন্দাজে। সেই সব দিন তো এখন আর নেই। এখন ওর সঙ্গে আমাদের বিসিবির ডাক্তার গেছেন লন্ডনে। তিনি সব দেখে-বুঝে আসবেন। ৬ মাসের রিহ্যাব প্রোগ্রাম নিয়ে আসবে। সবই ঠিকঠাক হবে। ওই সময় আমাকে দলের একজন কেউ ফোন দিলেই আমি চাঙা হয়ে যেতাম। আর মুস্তাফিজের পাশে তো আমরা, বোর্ড, মিডিয়া, মানুষ সবাই আছে। ওর সমস্যা হবে না।
যতটা জানা গেছে, ভেতরে ঢোকা বল নিয়ে (ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য) কাজ করতে গিয়েই মুস্তাফিজের এই চোট বেড়েছে। ফেরার পর নিশ্চয়ই এটা অনুশীলন বন্ধ করবে না?
মাশরাফি: অবশ্যই না। কাজ করে যেতে হবে। ভেতরে ঢোকা বল না শিখলে টেস্টে মুস্তাফিজ কার্যকর হবে না। ওকে টেস্ট ক্রিকেটে আরও ওপরে যেতে হবে, ওয়াসিম আকরামের লেভেলে যেতে হবে। কাজেই আরও অনেক কিছু শিখতে হবে। ইনজুরি হবে কি না হবে, সেই ভয় রাখলে চলবে না। আমি আশা করি, চোট কাটিয়ে প্রথম যে দিন নেটে বল করবে মুস্তাফিজ, প্রথম ডেলিভারিটাই ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা করবে। এভাবেই ভয়কে জয় করতে হয়।
তবু অপারেশনের পর একটা ‘ফিয়ার ফ্যাক্টর’ কাজ করতে পারে না?
মাশরাফি: এটা নির্ভর করে বয়সের ওপর, ভাবনার ওপর। নির্ভর করে সে কোন ধরনের ক্রিকেটার। মুস্তাফিজ জানে যে সে এখন আনপ্লেয়েবেল। বয়স বাড়লে ইনসিকিউরিটি আসে। আরও যে ভয়গুলার ব্যাপার আসে, কোনোটাই মুস্তাফিজের নেই।
আমি যদি ক্যারিয়ারের শুরুতে এসবে ভড়কে যেতাম, তাহলে কবেই শেষ হয়ে যেতাম। নাথান ব্র্যাকেন বা আরও অনেকের কথা শুনেছি, অপারেশনের পর আর সেভাবে ফিরে আসতে পারেনি। কারণ হয়ত ওদের ভীতিটা বেশি ছিল। কিন্তু ভয়টা দূরে রাখতে পারলেই হয়। এটা তো সামান্য খেলার ব্যাপার। ব্রেন অপারেশন বা ওপেন হার্ট করে লোক ঠিকমত চলছে, কাজ করছে। কাজেই এত ভয়ে নেই।
অল্প কদিনেই বেশ কটি চোটের ধাক্কা, আপনার কি মনে হয়, মুস্তাফিজ ক্যারিয়ার জুড়ে চোট প্রবণ থাকবে?
মাশরাফি: আমার জীবন দিয়ে আমি যেটা বুঝি, মফস্বলের ছেলে আমরা অনেক দূরন্ত। তবে শরীরটা ধরে রাখা জরুরি। আমরা যেভাবে হার্ড ট্রেইন করি, এরপর বিশ্রাম কতটা নিচ্ছি, জার্নি কতটা মেপে করছি…এই ব্যাপারগুলো গুরুত্বপূর্ণ। শরীরকে বিশ্রাম দিতে হবে। মুস্তাফিজ সেসব যথেষ্টই ভালো বোঝে। মেইনটেইন করতে পারে। ১৯-২০ বছরের ছেলে হিসেবে নিজেকে ও যেভাবে সামলাতে পারে, এটা দারুণ ব্যাপার। ভবিষ্যতে ধরে রাখতে পারলেই হয়।
ইংল্যান্ড সিরিজে তো মুস্তাফিজকে পাচ্ছেন না, অধিনায়ক হিসেবে কতটা মিস করবেন?
মাশরাফি: অনেক মিস করব। ওর মতো বোলারকে একটা সিরিজও না পাওয়া মানে… ম্যাচের কিছু মুহূর্ত আসে যখন শোয়েব আখতার, ব্রেট লি এলেও আমার লাভ নাই। আমার লাগবে মুস্তাফিজকে। ওকে নিয়ে আমি এতটাই নিশ্চিত থাকি। মিস তো করবই।
তবে বাকি যারা আছে, সবাই ভালো। রুবেল ফিরছে, তাসকিন ক্লিয়ার হয়ে ফিরব আশা করি। আল আমিন আছে। ব্যাক আপ আছে। ওদের প্রতিও আস্থা আছে।
মুস্তাফিজকে নিয়ে আপনার যে আশা বা স্বপ্ন ছিল, এই অপারেশনের ধাক্কায় কি ভাবনা একটু বদলাচ্ছে বা বদলাবে?
মাশরাফি: একটুও না! টেস্ট আমরা অনেক কম খেলি। যদি মোটামুটিও খেলি, মুস্তাফিজ অন্তত ৩০০ উইকেট পাবে। ওয়ানডেতে চারশর ওপরে তো পাবেই। আমার প্রশ্ন একটাই, বাংলাদেশের হয়ে কতটা সে খেলতে পারছে। আমি চাইব, প্রয়োজনে আর কোনো কিছু না খেলেও বাংলাদেশের হয়ে খেলুক। এটা যদি সে ঠিকভাবে করতে পারে, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব ক্রিকেট আরও একজন কিংবদন্তি দেখতে পাবে।