উদ্যোক্তা তৈরিতে অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: দীপু মনি

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ২৩তম সমাবর্তন হয়েছে গেল রোববার।

‘আইইউবি’র ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

লেখাপড়া শেষে কেবল চাকরির পেছনে না দৌড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ছেলেমেয়েদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়তে তুলেতে অভিভাবকেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

তিনি বলেন, “উদ্যোক্তা হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও আদর্শ সমাজ গঠনে আপনাদের (অভিভাবক) এগিয়ে আসতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরির পরিবেশ সৃষ্টিতে অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

‘আইইউবি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, গত রোববার ঢাকার বসুন্ধরায় ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দীপু মনি রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এর পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ না থাকলে সেই অবকাঠামোর দশা হয় অনেকটা কঙ্কালের মতো, যার নিজের কিছু করার ক্ষমতা নেই।“

অর্থনৈতিক উন্নয়নের জ্ঞান ও শিক্ষা উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

আইইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের তিনি শহীদদের অবদান মনে রাখার কথা বলেন।

আইইউবিতে এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পাওয়া তিন শিক্ষার্থীই নারী।

সে প্রসঙ্গে উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, "আইইউবিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই নারী শিক্ষার্থীরা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফলাফল করছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আইইউবিকে নারীবান্ধব ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে সব উদ্যোগ নিয়েছি, আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের সাফল্য তারই ফল।“

এবারের সমাবর্তনে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৫৯ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১,১৪০ জন স্নাতক ও ৩১৯ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের।

ভ্যালেডিক্টোরিয়ান মনোনীত হন চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পাওয়া সোশিওলজি বিভাগের শিক্ষার্থী এ্যান্ড্রিয়ানা বাশার। এছাড়া বিবিএ’র দুই শিক্ষার্থী অপসরা আহসান এবং সানজিদা আফরিনও চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল পান।

অলরাউন্ডার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোবাইতা ফাইরোজ। স্নাতকোত্তার পর্যায়ে ‘অসাধারণ’ ফলাফলের জন্য টপ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অভিজিত সাহা এবং এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্টের আলাভী কিফায়াত রেজা।

অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতির পাশাপাশি, সহশিক্ষা কার্যক্রমের সফল শিক্ষার্থীদেরও সম্মাননা দেওয়া হয়।

এছাড়া সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডর জন্য সম্মাননা পেয়েছেন বিবিএ’র শিক্ষার্থী তাওহীদুর রহমান অনন্য এবং বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থী সাদিয়া রওশন।

খেলাধুলায় স্বীকৃতি অর্জন করেন বিবিএ’র স্যামুয়েল রিকার্ডো রোজারিও এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মো. মাহিম রহমান প্রান্ত। সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের জন্য সম্মাননা পান বিবিএ’র মো. আনাতুল আরাফ হক রিসাদ।

আইইউবির ট্রাস্টি সদস্যরা, অভিভাবকেরা এবং প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কর্মকর্তারা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।