রায়ের পর নাজমুলের পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেল খাটেন মিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। পরে আপিল করে ১১ দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে যান তিনি।
Published : 13 May 2024, 04:05 PM
নিজের সাজা অন্যজনকে দিয়ে খাটানোর ঘটনায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গেছেন।
সোমবার ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নাজমুল হাসান।
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নাজমুল হাসানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।
শুনানিতে শ্রী প্রাণনাথ বলেন, আমার মক্কেলের ৭ বছর সাজা হয়েছে, সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাভোগ করতে হবে তাকে। আগে একজন আইনজীবী অন্য একজনকে দাঁড় করিয়ে নাজমুল হাসান পরিচয়ে জেল খাটিয়েছিলেন, যা হাই কোর্টের নজরে আসে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের
পর। মহামান্য হাই কোর্টে একটি আপিল করা হয়। হাই কোর্ট আজকের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন
বিচারিক আদালতে। সে কারণে আমরা এসেছি।”
আদালতের আদেশের পর এ আইনজীবী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এখন উচ্চ আদালতে আপিল করে শুনানির জন্য প্রার্থনা জানাব। সেদিন জামিনও চাইব।”
‘মাদক মামলায় যুবলীগ নেতার আয়নাবাজি’ শিরোনামে গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি দৈনিকে সংবাদ ছাপা হয়। তবে এর আগে ওই মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হাসানের নামে ২০২৩ সালে হাই কোর্টে একটি আপিল করা হয়। হাই কোর্টের একটি বেঞ্চে আপিল শুনানি শেষে গত
১৫ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য ছিল।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সেদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করে আইনগত প্রতিকার চান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদালত রায় ঘোষণা মুলতবি করেন।
অন্যদিকে বিচারিক আদালতের একজন আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করেন। পরে প্রধান বিচারপতি আপিলটি নিষ্পত্তির জন্য ওই বেঞ্চে পাঠান।
গত ২৪ এপ্রিল এক আসামির পরিবর্তে আরেকজনের সাজা খাটার ঘটনায় নিম্ন আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও কারা কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা তলব করেছিল হাই কোর্ট। সাত দিনের মধ্যে তাদেরকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
২০২০ সালের অগাস্ট মাসে উত্তরার একটি বাসায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ আনোয়ার হোসেন নামে একজনকে আটক করে। সে সময় পালিয়ে যান মামলার মূল আসামি উত্তরার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান। এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে মাদকদ্রব্য
নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মামলা করে। বিচারে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় পলাতক নাজমুল হাসানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত।
রায়ের পর নাজমুলের পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেল খাটেন মিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ১১ দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে যান তিনি।
পরে এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।