দেশে পুরনো গাড়ির বিক্রির কমে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে শুল্কের পরিমাণ কমাতে নীতি সহায়তা চেয়েছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানিকারক ও পরিবেশকদের সংগঠন বারভিডা।
Published : 14 Dec 2019, 06:25 PM
শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে একগুচ্ছ প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোটার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আব্দুল হক।
তিনি বলেন, পুরনো গাড়ি আমদানিতে অবচয় সুবিধা বাজারমূল্যের ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাশ ধরায় ব্যবসায়ীদের বেশি শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে পুরনো গাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি অনেক কমেছে।
বারভিডার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৩ হাজার ৭৫টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হয়, যেখানে গত অর্থবছরে তা প্রায় অর্ধেক কমে ১২ হাজার ৫০২টি হয়েছে।
বারভিডা সভাপতি বলেন, এর ফলে একবছরের ব্যবধানে পুরনো গাড়ি থেকে শুল্ক বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ইয়েলো বুকে উদ্ধৃত মূল্য (বাজার মূল্য) অনুযায়ী ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা শুল্ক কর দিতে হয়। অথচ একই মডেলের নতুন গাড়ি আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় মাত্র ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
“অর্থাৎ একটি পুরনো গাড়ির দাম নতুনের চেয়ে ১৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা বেশি পড়ছে। এক্ষেত্রে সরকারও ওই একটি গাড়ি থেকে সাড়ে ১৬ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।”
তিনি বলেন, জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ইয়েলো বুকে যে দাম উল্লেখ থাকে, সেই দাম থেকে অবচয় সুবিধা হিসেবে ৩৫ শতাংশ বাদ দিয়ে যে মূল্য হয় তার ওপর এখন শুল্ক ধরা হচ্ছে, যেটা দুবছর আগে ৪৫ শতাংশ ছিল।
“বাস্তবে আমরা তার (ইয়েলো বুক) চেয়ে অনেক কম দামে গাড়ি কিনি। কিন্তু সরকার আমাদের কেনা দামের ওপর শুল্ক আরোপ করে না। নতুন গাড়ির মতো পুরনো গাড়িতেও ক্রয়মূল্যের উপর শুল্ক আমরা অনেক কম দামে জাপানি গাড়ি ক্রেতাদের সরবরাহ করতে পারি। তাতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে।”
তিনি বলেন, আমদানিতে নীতি বৈষম্যের পাশাপাশি সরকার পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা কমানোর পর একই হারে শুল্ক আরোপ করায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ী বিক্রির পতন ঘটেছে। এর ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, আর ব্যবসায়ীরা পড়েছেন আর্থিক ক্ষতির মুখে।
এমন পরিস্থিতিতে পুরনো গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে নীতি সহায়তা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান বারভিডা সভাপতি।
পুরনো গাড়ির বাজার মূল্য থেকে রপ্তানিকারক দেশের আরোপিত ১০ শতাংশ ভোগ কর ও পরিবেশকের ৩০ শতাংশ কমিশন বাদ দিয়ে শুল্কমূল্য নির্ধারণ করা এবং অবচয় সুবিধা ৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করার দাবি প্রস্তাব করেন তিনি।
অপর দিকে নতুন গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে তার উপর নির্ধারিত হারে শুল্ক ও আরোপ করার প্রস্তাব করেন পুরনো গাড়ির এই ব্যবসায়ী।
বিজয়নগরের আকরাম টাওয়ারে বারভিডা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ সভাপতি এসএম আনোয়ার সাদাত ও জসিম উদ্দিন মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।