ঢাকার পূর্ব প্রান্তে রামপুরা সেতু থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে আফতাবনগর পশুর হাট।
Published : 08 Aug 2019, 08:09 PM
এই হাটে বিস্তৃত পরিসর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে গরু ও ছাগল রাখা হলেও যারা কিনতে যাবেন, নির্মাণাধীন রাস্তার ভোগান্তি পেরিয়ে যেতে হবে তাদের।
বৃহস্পতিবার বিকালে এই হাটে অনেক গরু দেখা গেলেও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল খুব কম।
তবে দফায় দফায় বৃষ্টির ফাঁকে যারা ঢুঁ মারছিলেন হাটে, তাদের অধিকাংশকেই গরু কিনেই বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।
বিকালেও নতুন গরুবাহী কয়েকটি ট্রাক আফতাবনগরে ঢুকতে দেখা যায়। বাজার ‘ভালো’ থাকলে আরও কিছু গরু আসার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বেপারিরা।
গত বছর আফতাবনগর হাটে যে দামে গরু বিক্রি করে গিয়েছিলেন বেপারী শাহিন, এবার তার প্রায় দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছেন তিনি।
কুষ্টিয়ার এই বেপারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার গরুর দাম ভালোই। গতকাল হাটে এসে আজ সকালেই একটি গরু বিক্রি করেছি ভালো দামে।”
তবে তার কপালে ভাঁজ ফেলেছে দিনভর বৃষ্টি; এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে বাজারে ধস নামবে বলে তার আশঙ্কা।
ছোট আকারের একটি গরুর দাম ৯০ হাজার টাকা হাঁকিয়ে শাহিন বলেন, গত বছর কোরবানির বাজারের শুরুর দিকে এই সাইজের গরু ৬৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছিলেন তিনি। শেষ দিকে গরুর দাম আরও পড়ে যায়।
হাটের প্রবেশ মুখে এক নম্বর হাসিল ঘরের খুঁটিতে বেঁধে রাখা ছিল এক লাখ ৭৭ হাজার টাকা মূল্যের কালো রঙের একটি শায়াল ষাঁড়। গরুটিতে অন্তত ১০ মণ মাংস হবে বলে ধারণা করছেন বিক্রেতা সানাউল হক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুঝে উঠতে পারিনি। হাটের যে অবস্থা এই গরুটি দুই লাখ টাকা অনায়াসেই বিক্রি করা সম্ভব ছিল।”
সানাউলেরর কথা সত্যতা পাওয়া যায় তাৎক্ষণিক। তার গরুর চেয়ে কিছুটা বড় একটি বলদ কিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা দামে।
ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে হরিয়ানা, ফিজিয়ান ও পাবনা জাতের ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন মনোয়ারুল ইসলাম। রাতে হাটে আসার পর সকালেই দুই লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করেছেন একটি পাবনা জাতের গরু। এটার ১০ মণ মাংস হবে বলে আশা করছেন তিনি।
সানাউল বলেন, “এবার বৃষ্টির কারণে বাথান ও বেপারিদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রথম দিন থেকেই। তবে এখন পর্যন্ত বাজারের অবস্থা বেশ ভালো। বাজারে এমন দাম থাকলে বেপারি ও খামারিরা কিছু টাকা লাভ করতে পারবে।
“হাটে খদ্দের আসছে, সবাই দাম বলছে ভালো। আবহাওয়া ভালো থাকলে হাট জমে উঠবে।”
এই হাটে বড় আকারের গরুর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছোট গরুও দেখা গেছে। ছোট গরুর অধিকাংশই এসেছে জামালপুর জেলা থেকে।
তবে কোনো গরুর দামই ৮০ হাজার টাকার নিচে নেই। গত বছর শেষ মুহূর্তে এসব গরু ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গিয়েছিল।
হাটের ১ নম্বর হাসিল ঘরের কর্মীরা জানান, বেচাকেনা হচ্ছে মাঝামাঝি পর্যায়ে। অনেকের হাটে আসার পরিকল্পনা থাকলেও বৃষ্টির কারণে আসতে পারছেন না। বৃষ্টি থামলে গরু বিক্রির প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে।
আগামী সোমবার কোরবানির ঈদ উদযাপন হবে, তার আগ পর্যন্ত চলবে গরু কেনা-বেচা।